ধানের চারা তুলে ফেরার পথে নিখোঁজ দুই শিশু, গর্ত থেকে লাশ উদ্ধার

মোহনা বেগম ও মেঘলা আক্তারছবি: সংগৃহীত

বিকেলবেলা স্বজনদের সঙ্গে বোরো ধানের চারা তুলে বাড়ি ফিরছিল চাচাতো দুই বোন মেঘলা আক্তার (৭) ও মোহনা বেগম (৬)। কিন্তু সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন স্বজনেরা। একপর্যায়ে একটি গভীর গর্তে দুই শিশুর লাশ পাওয়া যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নের মধ্য চুনঘর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মেঘলা আক্তার স্থানীয় বাসিন্দা তাহির আলীর মেয়ে। মোহনা বেগম তাহিরের চাচাতো ভাই প্রতিবেশী বিলাল মিয়ার মেয়ে। মেঘলা চুনঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি ও মোহনা প্রাক্-প্রাথমিক শ্রেণিতে পড়ত।

পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাহির আলী বর্গাচাষি। গতকাল বিকেলের দিকে তিনি বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে জমিতে তৈরি বীজতলা থেকে বোরো ধানের হালিচারা তুলছিলেন। একপর্যায়ে মেঘলা ও মোহনা সেখানে ছুটে যায়। তারাও কাজে নেমে পড়ে। সন্ধ্যা নেমে যাওয়ায় তাহির তাদের বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। এরপর দুজন বাড়ির পথে রওনা দেয়। সন্ধ্যার পর তাহির বাড়ি ফিরে জানতে পারেন মেঘলা বাড়ি আসেনি। মোহনাও না ফেরায় স্বজনেরা উৎকণ্ঠায় পড়ে যান। আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও তাদের সন্ধান পাননি। পরে বাড়ির পেছনে চার-পাঁচ ফুট গভীরতার পানিভর্তি গর্তে তাদের লাশ পাওয়া যায়।

কাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দীপু ধর আজ শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় এক ব্যক্তি খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে জমির মাটি কেটে বসতঘরের ভিটা তৈরি করেন। এতে ওই স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টিতে সেখানে পানি জমে যায়।

খবর পেয়ে রাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ কুলাউড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) দীপংকর ঘোষ ও কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।

ওসি মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় দুই শিশুর শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। হালিচারা তুলে ফেরার সময় হাত-পা পরিষ্কার করতে গিয়ে গর্তের পানিতে পড়ে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বিনা ময়নাতদন্তে দুজনের লাশ দাফন করতে স্বজনেরা আবেদন করেছেন।