কলেজ অধ্যক্ষের নামে এল বোমা, উদ্ধারে কাজ করছে র‍্যাব-পুলিশ

বোমাটি উদ্ধারে কাজ করছে র‍্যাব ও পুলিশ। শনিবার দুপুরে গুরুদাসপুর পৌর শহরের সরকারি বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে
ছবি: প্রথম আলো

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার একটি কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর পার্সেল হিসেবে এসেছে বোমা। আজ শনিবার দুপুরে কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের পাশে বোমাটি শনাক্ত করা হয়। বেলা দুইটার দিকে র‌্যাব-৫ (রাজশাহী)-এর বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেই পার্সেলে বোমা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। বোমাটি উদ্ধারে কাজ করছেন র‍্যাব ও পুলিশের সদস্যরা। এ নিয়ে কলেজ ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

এ বিষয়ে আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে র‌্যাব–৫ এর বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান লেন্স করপোরাল লাবলু খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, প্লাস্টিকের একটি ঝুড়িতে (আম পাঠানোর ঝুড়ি) শক্তিশালী বোমা রয়েছে। তাঁরা প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সার্কিট ডিটেকটর দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। তাঁদের কাছে শক্তিশালী বোমাটি নিষ্ক্রিয় করার যন্ত্রপাতি নেই। বোমাটি নিষ্ক্রিয় করতে উচ্চতর যন্ত্রপাতি ও বোমা বিশেষজ্ঞ দল আনার জন্য ঢাকায় র‌্যাবের সদর দপ্তরে খবর পাঠানো হয়েছে। সেই দল এলেই বোমাটি নিষ্ক্রিয় করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তারা না আসা পর্যন্ত বোমাটি স্থানীয় পুলিশ বিশেষ নজরদারিতে রাখবে।

গুরুদাসপুর থানা-পুলিশ, কলেজ কর্তৃপক্ষ ও র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, গুরুদাসপুর পৌর শহরের সরকারি বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষের কার্যালয়ের দরজা ঘেঁষে কে বা কারা প্লাস্টিকের বস্তায় মোড়ানো একটি প্লাস্টিকের ঝুড়ি রেখে যান। ঝুড়ির ওপরে লেখা, ‘আম্রপালি ৩০ কেজি, প্রাপক, প্রিন্সিপাল বঙ্গবন্ধু কলেজ, গুরুদাসপুর, নাটোর।’ এ লেখার নিচে একটি মুঠোফোন নম্বরও উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম বলেন, আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কলেজে আসেন তিনি। দরজা ঘেঁষে কার্টনে বিশেষ বার্তা লেখা থাকায় সন্দেহ হয় তাঁর। অন্য শিক্ষকদের সহায়তায় থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।

এভাবে পার্সেল আকারে এসেছে বোমাটি। শনিবার দুপুরে গুরুদাসপুর পৌর শহরের সরকারি বঙ্গবন্ধু টেকনিক্যাল বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটে
ছবি: প্রথম আলো

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ারুজ্জামান বলেন, অধ্যক্ষের ফোন পেয়ে সেখানে একদল পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশের সন্দেহের কারণে প্যাকেটটি খুলতে র‌্যাবকে খবর পাঠানো হলে বেলা দুইটার দিকে র‌্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট এসে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বোমা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।

কলেজটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি পক্ষের মামলা-মোকদ্দমা চলছে বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিরোধের জের ধরে সম্প্রতি প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে ও কলেজটি উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল। এই বিরোধ থেকে প্রতিপক্ষ তাঁর অফিসকক্ষের সামনে বোমা পেতে রাখতে পারে।