ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ, গৃহবধূর আত্মহত্যার চেষ্টা

ধর্ষণ
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের শ্রীপুরে ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক গৃহবধূকে বারবার নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা জানার পর সন্তান রেখে স্বামী তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল বুধবার রাতে নিজ বাড়ি থেকে ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি মামলা হয়েছে।

মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলার ফিরোজ মিয়া (৩৫) ও হজরত আলীকে (৩০)। শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। ৮ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী কর্মক্ষেত্রে ছিলেন। দিবাগত রাত দুইটার দিকে তিনি (গৃহবধূ) প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বের হন। এ সময় বাইরে ওত পেতে থাকা ফিরোজ মিয়া ঘরে প্রবেশ করে ধর্ষণ করেন এবং নিজের মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। পরে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার নির্যাতন করেন।

ভুক্তভোগী নারী আরও বলেন, গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তিনি ঘরের বাইরে বের হলে ফিরোজের ভাই হজরত আলী তাঁকে জোর করে ধরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় তাঁর চিৎকার–চেঁচামেচিতে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে হজরত আলী তাঁর জুতা ও পোশাক রেখে দৌড়ে পালিয়ে যান। এসব ঘটনার জেরে স্বামী তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন।

গৃহবধূ আরও বলেন, এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিষয়টি টাকা দিয়ে রফাদফা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। এরপর গত রোববার শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তিনি।

হাসপাতালে উপস্থিত গৃহবধূর মা প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত সাড়ে সাতটার দিকে তাঁর মেয়ে ঘরের দরজা লাগিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রুবেল মিয়া নামের আরেক প্রতিবেশী বলেন, শুক্রবার রাতে চিৎকার শুনে ৮ থেকে ১০ জন প্রতিবেশী ওই গৃহবধূর বাড়িতে উপস্থিত হন। মো. তারেক নামের আরেক পড়শি বলেন, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত হজরত আলীর জুতা ও গেঞ্জি পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরা।

এ ঘটনায় করা মামলার আসামি দুজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ফিরোজের মুঠোফোনে কল দিলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। ওই গৃহবধূর স্বামী বলেন, ‘এ ঘটনায় দুর্নাম রটেছে। এলাকায় মুখ দেখাতে পারি না। এ জন্য স্ত্রীকে বের করে দিয়েছি। তবে আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। যাদের জন্য আমার সংসারে অশান্তি, তারা শাস্তি পাক।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাসিম আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।