৫ ঘণ্টায় দুবার মেরামত ও দুবার ইঞ্জিন বদলেও গন্তব্যে পৌঁছায়নি মহানগর গোধূলী ট্রেন
কুমিল্লায় ৫ ঘণ্টার ব্যবধানে তিনবার বিকল হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মহানগর গোধূলী ট্রেনের ইঞ্জিন। প্রথম দুই দফায় ইঞ্জিন মেরামত করে কিছু দূর এগোলে আবারও বিকল হয় ইঞ্জিন। এরপর দুবার ইঞ্জিন পরিবর্তন করলেও ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি। সর্বশেষ ট্রেনটিকে ঢাকায় নেওয়ার জন্য নোয়াখালী থেকে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি ইঞ্জিন আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রেলওয়ে।
দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ধরে ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে নারী ও শিশু যাত্রীরা বেশি কষ্ট পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। সোমবার রাত ১০টা ২৫ মিনিটে এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত বিকল হওয়া মহানগর গোধূলী ট্রেনটি লাকসাম রেলওয়ে জংশনে অবস্থান করছিল। লাকসাম রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার ওমর ফারুক ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লাকসাম রেলওয়ে জংশন সূত্র জানায়, জেলার নাঙ্গলকোটের হাসানপুর রেলস্টেশন পার হওয়ার একটু পরেই সোমবার বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে মহানগর গোধূলী ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। মেরামত করে রওনা হলে লাকসামের নাওটি রেলস্টেশনের কাছে এসে আবারও বিকল হয় ইঞ্জিনটি। সেখানে পুনরায় মেরামত করে ট্রেনটি সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে লাকসাম রেলওয়ে জংশনে প্রবেশ করে আবার বিকল হয়ে পড়ে। এরপর ট্রেনটি আর এগোতে পারেনি।
রাত ১০টা ২৫ মিনিটে লাকসাম রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার ওমর ফারুক ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, লাকসাম জংশনে আসার পর প্রথমে ইঞ্জিন পরিবর্তন করা হয়। কিন্তু সেই ইঞ্জিন ট্রেনটি ছাড়তেই বিকল হয়ে পড়ে। এরপর একটি মালগাড়ির ইঞ্জিনে ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। যার কারণে বাধ্য হয়ে নোয়াখালী থেকে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন খবর দেওয়া হয়েছে। সেটি ২০ মিনিটের মধ্যে এসে পৌঁছাবে বলে আশা করছেন তিনি। উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিল এলেই মহানগর গোধূলী ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। কয়েক ধাপে ৫ ঘণ্টার বেশি ট্রেনটি বিকল হয়ে থাকলেও অন্যান্য ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হয়নি।
এর আগে গত শনিবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে জেলার লালমাই উপজেলার শ্রীনিবাসন এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মহানগর গোধূলী ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে প্রায় এক ঘণ্টা পর ইঞ্জিন মেরামত করে ট্রেনটি ওইদিন সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের সময় ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। তবে ডাবল হওয়ায় এতে ট্রেন চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মহানগর গোধূলী ট্রেনের যাত্রী হুমায়ুন কবির রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মহানগর গোধূলী ট্রেনটির ইঞ্জিন দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল বিষয়টি গুরুত্বসহকারে সমাধান করা। কিন্তু প্রতিবারই জোড়াতালি দিয়ে ইঞ্জিন মেরামত করা হচ্ছে বলে মনে হয়েছে। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘এতক্ষণে ঢাকা গিয়ে পৌঁছাতাম, কিন্তু বারবার ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ার কারণে এখনো লাকসামে বসে আছি।’