চাকসুর ভোট গ্রহণ শেষ, পক্ষপাতের অভিযোগ ছাত্রদলের
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল চারটায় আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল।
দিনভর নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা। তবে নির্বাচন কর্মকর্তার সই ছাড়া ব্যালট পেপারে ভোট দেওয়া, অমোচনীয় কালি ওঠে যাওয়াসহ ভোট গ্রহণে অব্যবস্থাপনা নিয়ে নানা অভিযোগও ছিল প্রার্থীদের।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. মনির উদ্দিন বিকেল সোয়া চারটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ভোট গ্রহণ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে বিকেল চারটায় শেষ হয়েছে। এখন কেন্দ্র থেকে ব্যালটগুলো পৃথক করে ডিন কার্যালয়ে নিয়ে আসা হবে। এরপর সেখানে ক্যামেরার সামনে ভোট গণনা করা হবে।
চাকসুর ভোট গ্রহণ আনুষ্ঠানিকভাবে চারটায় শেষ হলেও এরপরও বিভিন্ন কেন্দ্রের ভেতরে ভোটারদের সারিতে অপেক্ষমাণ ছিলেন অনেক শিক্ষার্থী। সারিতে থাকা এসব ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
বিকেল ৪টা ৮ মিনিটেও ভোট গ্রহণ করতে দেখা যায় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ৩১২৪ নম্বর কক্ষে। কক্ষের সামনে ভোট দিতে অপেক্ষমাণ ছিলেন ১৩ জন। কক্ষটিতে ভোটার সংখ্যা ৪৫০ জন। এর মধ্যে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ২৮৬ জন ভোট দেন।
নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ
বিকেল চারটায় ভোট গ্রহণের সময় শেষ হলে ব্যবসায়ী প্রশাসন অনুষদ কেন্দ্রের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় কয়েকজন ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ চাইলেও তাঁদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রশাসন অনুষদ কেন্দ্রের এলইডি স্ক্রিনও এ সময় বন্ধ ছিল। বিষয়টি জানার পর ছাত্রদলসহ চারটি প্যানেলের একাধিক প্রার্থী সেখানে জড়ো হয়ে দায়িত্বরত শিক্ষকদের সঙ্গে তর্কে জড়ান।
এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশনার অথর্ব নির্বাচন কমিশনার। এই মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশনার থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা; আস্থার জায়গা নষ্ট হয়ে গেছে।’
নোমান বলেন, ‘একটা প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের আটটি অভিযোগ এসেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের যে শাস্তি, সে শাস্তি নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করতে পারে নাই। কারণ, একটা, বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়ার স্বার্থে।’ তিনি বলেন, ‘এই প্রশাসন জামায়াতি প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন মেরুদণ্ডহীন। এটা জানার পরও আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি। কিন্তু আমরা দেখেছি ডাকসু ও জাকসুর ন্যায় এটিও একটি প্রহসনমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে।’
ছাত্রদল নেতা নোমানের বক্তব্যের সময় তাঁর পাশে স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী মাহফুজুর রহমান, দ্রোহ পর্ষদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ, সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী সাকিব মাহমুদ রুমি উপস্থিত ছিলেন। তাঁরাও নোমানের কথায় সায় দেন।
ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন এ সময় বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আমাদের আশ্বস্ত করেছিল ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে যে অভিযোগগুলো এসেছে, অনিয়ম হয়েছে, কারচুপি হয়েছে, সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে চাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠু নির্বাচনরূপে আমাদের কাছে উপহার দেবেন। তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন, তাঁরা অমোচনীয় কালি দেবেন। কিন্তু তাঁরা সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন।’ তিনি বলেন,‘ একজন শিক্ষার্থীকে যদি অমোচনীয় কালি দেওয়া না হয়, তাহলে একজন শিক্ষার্থী চাইলে একাধিকবার ভোট দিতে পারবেন। উনারা এখন দাবি করছেন, অমোচনীয় কালি দিতে পারবেন না সেটা আগে বলেছেন। অথচ বলেছেন একটু আগে।’