কক্সবাজারের তিন উপজেলায় নির্বাচন কাল, ২০ কেন্দ্রে ঝুঁকি বেশি

কক্সবাজােরের পেকুয়া জিএমসি ইনস্টিটিউশন কেন্দ্রটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। আজ দুপুরেছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের ঈদগাঁও, পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। সংঘাতের ঝুঁকি বিবেচনায় তিনটি উপজেলার ২০২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২০টিকে অধিক গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন।

চকরিয়া

একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত চকরিয়া উপজেলার ১১৪ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে। এর মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রকেই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কক্সবাজার-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলম (ঘোড়া) ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী (দোয়াত-কলম)।

জাফর আলম দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কাছে তিনি হেরে যান। সংসদ নির্বাচনে ইবরাহিমের পক্ষে কাজ করেন ফজলুল করিম সাঈদী। উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পর থেকে বিভিন্ন পথসভায় জাফর আলম ও ফজলুল করিম একে অপরের বিষোদ্‌গার করে আসছেন। এ অবস্থায় ভোটকেন্দ্রগুলোতে সংঘাতের শঙ্কা রয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, উপজেলার ১১৪ কেন্দ্রের মধ্যে সব কেন্দ্রকে সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন্দ্রগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।

চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী জাফর আলম অভিযোগ করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী (ফজলুল করিম সাঈদী) বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে জানতে চাইলে ফজলুল করিম উল্টো অভিযোগ তোলেন, জাফর আলম টাকা বিতরণ করে ভোট কেনার চেষ্টা করছেন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ইরফান উদ্দিন বলেন, চকরিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ১৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও ৭ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। ১১৪ কেন্দ্রেই কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬১ হাজার ১০৩ জন।

পেকুয়া

পেকুয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ (ঘোড়া); মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম (দোয়াত কলম), রুমানা আকতার (আনারস) ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম (মোটরসাইকেল)। রুমানা উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী। সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলার ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩০০ জন।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, উপজেলার ৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ২০টি কেন্দ্রকে অতিগুরুত্বপূর্ণ ও ২৪টি কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে কড়া নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে কাউকে গোলযোগ সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না।

ঈদগাঁও

কক্সবাজারের নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলা পরিষদে ভোটার সংখ্যা সংখ্যা ৮৮ হাজার ৭৬০। পাঁচটি ইউনিয়ন—ঈদগাঁও, ইসলামপুর, পোকখালী, ইসলামাবাদ ও জালালাবাদ নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় ভোটার সংখ্যা সংখ্যা ৮৮ হাজার ৭৬০ জন। ৪৪ ভোটকেন্দ্রের সব কটিকে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২১ সালের ২৬ জুলাই ঈদগাঁও উপজেলা গঠন করা হয়।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন পাঁচজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব (টেলিফোন), ব্যবসায়ী সেলিম আকবর (আনারস), সৌদি আরবের মক্কা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল আলম (মোটরসাইকেল), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক নুরুল কবির (ঘোড়া) এবং কুতুবউদ্দিন চৌধুরী (দোয়াত কলম)।