তারাকান্দায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ওএমআর পূরণ করে দেন দুই শিক্ষক, পরে আটক
ময়মনসিংহের তারাকান্দায় এইচএসসি পরীক্ষার সময় কেন্দ্রের অফিসকক্ষে বসে শিক্ষার্থীদের ওএমআর পূরণ দিয়েছেন দুজন শিক্ষক। বিষয়টি জানার পর আজ বৃহস্পতিবার ওই কেন্দ্রে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ঘটনার সত্যতা পান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। পরে দুজন শিক্ষককে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।
তারাকান্দার ফজলুল হক চৌধুরী মহিলা কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আটক শিক্ষকেরা হলেন ওই কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক মো. জয়নাল আবেদিন ও গণিতের প্রভাষক মো. হাবিবুর রহমান। পরীক্ষাকেন্দ্রে জয়নাল আবেদিন হল সুপার ও হাবিবুর রহমান পরীক্ষা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
প্রশাসন জানায়, ১৩ জুলাই পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা চলাকালে ওই দুই শিক্ষক অফিসকক্ষে বসে শিক্ষার্থীদের ওএমআর খাতার বৃত্ত ভরাট করে দেন। বিষয়টি জানার পর আজ বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কলেজে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। ফুটেজে দেখা যায়, সেদিন ১২টা ৫০ মিনিটের পর থেকে অফিসকক্ষে বসে ওএমআর শিট পূরণ করে দিচ্ছেন ওই দুই শিক্ষক। তাঁরা নিজেরাও দোষ স্বীকার করেছেন। পরে তাঁদের পুলিশের কাছে তুলে দেওয়া হয়।
ইউএনও জাকির হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগ পেয়ে আজ কলেজে গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা ও অভিযুক্ত ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তিতে পরীক্ষার্থীদের ওএমআর খাতা পূরণ করে দেওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়। এ অবস্থায় দুজনকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হচ্ছে এবং বিভাগীয় মামলার জন্য লেখা হবে। কী কারণে শিক্ষকেরা এমন করেছেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কারও একজনের অনুরোধ রাখতে গিয়ে শিক্ষকেরা এমনটি করেছেন বলে জানিয়েছেন।
এদিকে শিক্ষকদের এমন কাণ্ড ধরা পড়ার পর আজ কলেজের অধ্যক্ষ মো. হোসেন আলী চৌধুরী প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে দুজনকে অব্যাহতি দিয়ে ইউএনওকে চিঠি দিয়েছেন। পাবলিক পরীক্ষাগুলো (অপরাধ) আইন ১৯৮০ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইউএনওকে অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. হোসেন আলী চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুজন শিক্ষক যে কাজ করেছেন, তা গর্হিত ও শিক্ষক সমাজের জন্য কলঙ্কজনক। আমি বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করব।’
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ টিপু সুলতান বলেন, দুজন শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। ছাত্রদের ওএমআর শিটে অফিসকক্ষে বসে পূরণ করে দিচ্ছিলেন। সিসিটিভি ক্যামেরায় বিষয়টি দেখা যায়। কোনো কিছুর বিনিময়ে বা নিজেদের আত্মীয় হতে পারে—সে জন্য হয়তো এটি করেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে মামলা করবে।