মঠবাড়িয়ায় আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যু নির্বাচনী সহিংসতায় নয়: পুলিশ সুপার

জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত
ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার বাদুরা গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের (৫০) মৃত্যু নির্বাচনী সহিংসতায় হয়নি বলে দাবি পুলিশের। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফিং করেন পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম। তিনি জানান, আওয়ামী লীগ কর্মীর মৃত্যুর ঘটনাটি পূর্বশত্রুতার জের ধরে ঘটেছে।

আরও পড়ুন

পুলিশ সুপার বলেন, জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের সঙ্গে স্থানীয় সিরাজুল ফরাজীর বাদুরা বাজারের একটি দোকানঘরের জমি নিয়ে বিরোধ রয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়। পরে এদিন বিকেলে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত বাড়ি থেকে বাদুয়া যাওয়ার পথে সিরাজুল ফরাজী তাঁকে আহত করেন। এটি কোনো নির্বাচনী সহিংসতা নয়। ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় নিহত ব্যক্তির স্ত্রী বুলু বেগমও উল্লেখ করেছেন দোকানঘর নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাঁর স্বামীকে প্রতিপক্ষ সিরাজুল ফরাজী আহত করেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান ও পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন। এরপর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের ওপর হামলার কারণ জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বুধবার বিকেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামিম শাহনেওয়াজের সমর্থক জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েত বাড়ি থেকে বাদুরা বাজারে যাওয়ার পথে স্বতন্ত্র প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজীর সমর্থক যুবলীগ কর্মী সিরাজুল ফরাজী সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় সিরাজুল ফরাজী ধারালো অস্ত্র দিয়ে জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের মাথায় কুপিয়ে জখম করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। ওই রাতে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।

জাহাঙ্গীরের ওপর হামলার পর রাতেই থানায় মামলা করেন তাঁর স্ত্রী বুলু বেগম। মামলায় হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ আনা হয়। মামলায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, জাহাঙ্গীর মারা যাওয়ায় মামলাটি আদালতের অনুমতি নিয়ে হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের আত্মীয় সোবাহান শরীফের সঙ্গে একই গ্রামের সিরাজুল ফরাজীর বাবা বশির ফরাজীর স্থানীয় বাদুরা বাজারে একটি দোকানঘর নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এ কারণে সিরাজুল ফরাজী জাহাঙ্গীর পঞ্চায়েতের ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে পূর্বশত্রুতার জের ধরে জাহাঙ্গীরের ওপর সিরাজুল ফরাজী হামলা করেন। সিরাজুল ফরাজীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জাহাঙ্গীর গুরুতর জখম হন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আমার কর্মী। তাঁকে আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজীর লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে আহত করেন।’