শিশু ধর্ষণের পর সোচ্চার ছিলেন শাস্তির দাবিতে, গ্রেপ্তার হলেন আসামি হিসেবে

শিশু ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার মো. সামিরুল
ছবি: সংগৃহীত

নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৭) ধর্ষণের অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শুক্রবার শিশুটিকে ধর্ষণের ঘটনার পর থেকে গ্রামে সোচ্চার ছিলেন ওই তরুণ। এলাকার বিভিন্ন আড্ডা, মানুষের জটলা ও আলোচনায় তিনি ধর্ষকের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলতেন বলে র‌্যাবের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি।

গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. সামিরুল (২২)। তিনি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামের বাসিন্দা। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার বারইহাটি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সদস্যরা।

ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিশুটি স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। শুক্রবার সকালে শিশুটির মা উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে কাজ করতে যান। মাকে ডাকতে সকাল ৯টার দিকে শিশুটি বাড়ি থেকে বের হয়ে পাশের ওই গ্রামে যায়। সেখানে অপরিচিত এক ব্যক্তি মিষ্টি দেওয়ার কথা বলে শিশুটিকে পাশের বাঁশবাগানের নিয়ে ধর্ষণ করেন। একপর্যায়ে শিশুটির চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। তখন ধর্ষক সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান।

স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে স্বজনদের খবর দেন। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে প্রথমে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, র‌্যাবের সদস্যরা ভুক্তভোগী শিশুকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কিন্তু সে ধর্ষণকারীকে চিনতে পারেনি বলে জানায়। তবে ধর্ষক একজন ট্রলিচালক বলে জানায় শিশুটি। এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ট্রলিচালক সামিরুলকে শনাক্ত করা হয়। গতকাল দুপুরে কালিয়া উপজেলার বারইহাটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গতকাল কালিয়া থানায় মামলা করেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র‌্যাবের কর্মকর্তারা বলেছেন, গ্রেপ্তার সামিরুল ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। শিশুটি ছোট হওয়ায় তাঁকে শনাক্ত করতে পারবে না বলে এ ঘটনা ঘটান বলে জানিয়েছেন তিনি। শিশুটিকে ধর্ষণের পর এলাকার অন্যদের মতো যেকোনো আড্ডা-আলোচনায় ধর্ষণকারীর গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবির কথা বলতেন সামিরুল। তাঁকে কালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-৬ যশোর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ তাসমীম আলম বলেছেন, সামিরুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। র‌্যাব গতকাল বিকেলে তাঁকে থানায় হস্তান্তর করেছে। আজ সোমবার তাঁকে আদালতে নেওয়া হবে।