ঝালকাঠিতে পুলিশের হেফাজতে ছাত্রলীগ নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ

পুলিশের হেফাজতে ছেলেকে নির্যাতনের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন বাবা আবদুল খালেক হাওলাদার। রোববার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে
ছবি: প্রথম আলো

ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রুহুল আমিনকে পুলিশের হেফাজতে দুই দফায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিনের বাবা ফল ব্যবসায়ী আবদুল খালেক হাওলাদার এ অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ছেলের চিকিৎসা, মুক্তিসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

পুলিশকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় গত বৃহস্পতিবার ছাত্রলীগ নেতা রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। থানা-পুলিশের দাবি, ওই ছাত্রলীগ নেতাকে কোনো মারধর করা হয়নি। তবে অসুস্থ থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ১০ আগস্ট রাত ৯টার দিকে শহরের জেলা পরিষদের সামনে একটি হোটেলে নাশতা করছিলেন ছাত্রলীগ নেতা রুহুল আমিন ওরফে সায়মন (২৮)। এ সময় হোটেলের মালিককে তিন ব্যক্তি গালিগালাজ করছিলেন। রুহুল আমিন তাঁদের নিষেধ করায় ওই তিন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁকে মারধর করেন। রুহুল আমিন আত্মরক্ষা করতে গেলে পুলিশ সদস্য মো. আলাউদ্দিন আহত হন।

সংবাদ সম্মেলনে আবদুল খালেক হাওলাদার বলেন, মারধরের ওই ঘটনা কেন্দ্র করে রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়। পুলিশ সদস্য আকরাম হোসেন বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় মামলাটি করেন। তাঁকে থানায় এনে দুই দফায় ঝুলিয়ে বেদম পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এতে তাঁর একটি পা ভেঙে গেছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অন্য কোনো অভিযোগ নেই।

নির্যাতনের কারণে রুহুল আমিন দাঁড়াতে পারছিলেন না বলে জানান তাঁর বাবা আবদুল খালেক হাওলাদার। তিনি অভিযোগ করেন, নির্যাতনের পর তাঁকে চিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আহত রুহুল আমিনের সুচিকিৎসা ও অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে রুহুল আমিনের মা শেফালী বেগম ও দুই বোন রেখা আক্তার ও রিতু আক্তার উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে স্বজনেরা দাবি করেন, হোটেলে নাশতা করার সময় যে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার কোনো বিষয় ছিল না। অথচ পুলিশ মামলা দিয়েছে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে। ঘটনার পর থেকে ওই দোকানও পুলিশ চাপ দিয়ে বন্ধ রেখেছে বলে তাঁরা জানান। তাঁরা মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করেছেন।

জানতে চাইলে ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন সরকার প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সদস্যরা গাড়ির কাজ করে দোকানে নাশতা করতে গিয়ে হামলার শিকার হন। তাই পুলিশকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। রুহুল আমিনকে মারধর করা হয়নি। তবে তিনি অসুস্থ থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।