মাহিয়া মাহি প্রতীক পেয়ে বললেন, ‘ট্রাকটাই আমার জন্য বেস্ট’

ট্রাক প্রতীক পাওয়ার পর রাজশাহী-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহি বিজয়ী হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আজ রাজশাহী জেলা প্রশাসককের কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি (শারমিন আক্তার) ট্রাক প্রতীক পেয়েছেন। আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে রাজশাহীর ৬টি আসনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া শুরু হয়। এই ৬ আসনে মোট ৩৮ জনকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতীক পেয়ে প্রথম আলোকে এক প্রতিক্রিয়ায় মাহি বলেন, ‘ট্রাক প্রতীক আমি নিজেই পছন্দ করে নিয়েছি।’

মাহিয়া মাহি জানান, প্রচারের প্রথম দিন আজ সারা দিন সাংগঠনিক কাজ করবেন। সন্ধ্যায় তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালায় নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন করবেন। এখানে তাঁর নানাবাড়ি। এখান থেকেই শুরুটা করতে চান।

আরও পড়ুন

আজ প্রতীক বরাদ্দের পরই মাহি একটি খেলনা ট্রাক নিয়ে নিচে নেমে আসেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। মাহি বলেন, ‘আমার মা–বাবা, আমার স্বামী ট্রাক প্রতীক পছন্দ করার জন্য বলেছেন। এ ছাড়া অনেক জায়গায় জিজ্ঞাসা করেছি, কী প্রতীক নিলে আমার ভালো হয়? এলাকার মানুষও বলেছেন, ট্রাক প্রতীক নিলে তাঁরা চিনতে পারবেন। এই আসনে যাঁরা আমার প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন, তাঁরা সবাই আমাকে পচানোর চেষ্টা করবেন যে ট্রাক খাদে পড়ে যাবে, চাকা পাংচার হয়ে যাবে। তো এ রকম যখন তাঁরা করবেন, তখন উল্টো আমার প্রচারণা বেশি বেশি হবে। মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেবে, ট্রাক আমার প্রতীক। তাই ট্রাকটাই আমার জন্য বেস্ট।’

জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী মাহি বলেন, ‘আমার এলাকার মানুষ এমনভাবে বসে আছেন যে তাঁরা কখন ভোট দেবেন। তাঁরা সেবক আনবেন। এখানে পরিবর্তন চান। তাঁরা চান না, এখানে তাঁদের ধমকি দেওয়া হোক। তাঁরা এখানে ভয় পেয়ে বসবাস করবেন, এটা তাঁরা চান না। মানুষ চান বঙ্গবন্ধুর মতো একজন বন্ধুসুলভ নেতা, যাঁর পাশে বসে ভাত খাওয়ার সুযোগ পাবেন, তাঁকে ধরার সুযোগ পাবেন, কোনো বিপদ হলে তাঁর কাছে যাওয়ার সুযোগ পাবেন। কিন্তু আমাদের এখন যাঁরা নেতা আছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই বড়লোক আছেন, প্রভাবশালী আছেন। তাঁদের ড্রয়িংরুম পর্যন্ত যাওয়ার সুযোগ গ্রামবাসী পান না। আমি তাঁদের কাছাকাছি থাকব, তাঁরা এটা জানেন। এ জন্য তাঁরা আমাকে ভোট দেবেন এবং আমি জয়ী হব।’

আরও পড়ুন

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে মাহি বলেন, ‘পরিবেশ আজকে থেকে বোঝা যাবে। আমরা যখন প্রচার করতে যাব, তখন দেখব কত রকমের বাধা আসে। তখনই আসলে বুঝতে পারব, পরিবেশ কেমন। বাধা তো আসবেই। কেউ কি চাইবে আসনটি ছেড়ে দিই বা অন্য কেউ চলে আসুক। এটা তো কেউই চাইবে না।’

অজপাড়াগাঁয়ের মানুষ তাঁকে চেনে জানিয়ে মাহি বলেন, ‘আমি মাঠে অবশ্যই সুবিধা পাব। আপনি অজপাড়াগাঁয়ে গেলে মানুষ আপনাকে চিনবেন না, কিন্তু আমি যদি যাই, তাঁরা আমাকে চিনবেন। কারণ, এখন ডিজিটাল যুগ। প্রত্যেকের ঘরে মোবাইল ও ইন্টারনেট আছে। সেই ইন্টারনেটে তাঁরা একটি হলেও আমার গান দেখেছেন এবং তাঁরা আমাকে চেনেন। মা-বোনদের কাছে গেলে তাঁরা আমাকে জড়িয়ে ধরেন। এটাই আমার অ্যাডভানটেজ।’

আরও পড়ুন

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বিষয়ে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘এই এলাকায় মানুষের কোনো কথা বলার স্বাধীনতা নেই। তাঁদের এলাকায় একটি রাস্তা নেই, সে কথাটা যে দাঁড়িয়ে বলবেন, সেটা বললে তাঁকে অপমানিত হতে হয়, ধমক খেতে হয়। তাঁরা এমনটা চান না।’

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে প্রথমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন মাহিয়া মাহি। কিন্তু সেই আসনে দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে তিনি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তবে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরের গরমিল থাকায় তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিলের পর প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি। রাজশাহী-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন। তিনি ও মাহি বাদেও আরও ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন এ আসনে।

আরও পড়ুন