ঠাকুরগাঁওয়ে সাবেক দুই এমপিসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির মামলা

দবিরুল ইসলামছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) দবিরুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে এই আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁওয়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলাটি করেন সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুল ইসলাম।

মামলায় আওয়ামী লীগের ২৮ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ১৫–২০ জনকে। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের ছেলে ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মমিরুল ইসলাম, দবিরুল ইসলামের ভাই ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মমিনুল ইসলাম, আমজানখোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আকলু, পাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি প্রমুখ।

হাবিবুল ইসলাম বলেন, ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের বিভিন্ন সময় তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেউরঝাড়ী এলাকায় ৯০ একর জমি কেনেন। সে সময় সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলামের নির্দেশে একদল লোক তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তাঁরা হামলা করেন। এ ঘটনায় তিনি আদালতে ২৬টি মামলা করেন। মামলাগুলো রায়ের পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেসব মামলাকে রাজনৈতিক দেখিয়ে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এরপর দবিরুল ইসলাম তাঁর ৭০ একর জমি দখলে নেন। ক্ষমতায় থাকার কারণে সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ হয়নি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুল ইসলাম বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেউরঝাড়ী এলাকায় দলিলমূলে ও আমমোক্তারনামামূলে ৯০ একর জমি পেয়ে ভোগদখল করে আসছিলেন। আসামিরা সেই জমির বিপরীতে ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা জমি দখলে নেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন। এ অবস্থায় গত ১০ আগস্ট হাবিবুল ইসলাম সেই জমিতে গেলে দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘বহুদিন ১০ কোটি টাকা চাঁদার জন্য বলছি; কিন্তু চাঁদা দিচ্ছ না।’ তিনি (দবিরুল ইসলাম) চাঁদা না দিলে হাবিবুল ইসলামকে মারপিট করে জমি দখল করে নিতে অন্য আসামিদের হুকুম দেন। হুকুম পেয়ে আসামিরা হাবিবুল ইসলামকে মারপিট করতে এগিয়ে এলে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ঠাকুরগাঁও থানাকে এফআইআর হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সাবেক দুই সংসদ সদস্য দবিরুল ইসলাম ও মাজহারুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।