নেত্রকোনায় শ্বশুরবাড়িতে মারধরের শিকার হয়ে যুবকের মৃত্যু

হত্যা
প্রতীকী ছবি

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মো. ফরিদ মিয়া (২৭) নামের এক যুবক মারধরে আহত হয়ে মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ শুক্রবার বিকেলে উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বামনগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ফরিদ মিয়া ওই গ্রামের মো. হাসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় ইটভাটার শ্রমিক।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদ মিয়া প্রায় দুই বছর আগে একই গ্রামের মৃত আবু সিদ্দিকের মেয়ে ফাতেমা আক্তারকে বিয়ে করেন। তাঁদের সংসারে সাত মাসের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। ছয় মাস আগে ফরিদ তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে শ্বশুরবাড়িতে রেখে কুমিল্লায় একটি ইটভাটায় কাজ করতে যান। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রী শিশুটিকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। একই সঙ্গে ফরিদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ফরিদ গ্রামের বাড়িতে যান। পরে আজ দুপুরে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানতে পারেন, তাঁর স্ত্রী অন্য একজনকে বিয়ে করে ঢাকায় চলে গেছেন। কিছুক্ষণ পর ফরিদ তাঁর টাকায় কেনা ঘরে লাগানো সৌরবিদ্যুতের সরঞ্জাম নিজ বাড়িতে নিয়ে আসতে চান; কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোকজন এতে বাধা দেন।

হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ফরিদ নামের ওই ব্যক্তি মারা যান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
সুমন পাল, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক, কলমাকান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ফরিদের বাবা হাসিম উদ্দিনের অভিযোগ, এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ফরিদের শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম, শ্যালিকা কুলসুমা আক্তার ওরফে ময়না, কুলসুমার স্বামী ছায়েদ আলী এবং ছায়েদ আলী এক বন্ধু মিলে ফরিদকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুমন পাল তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

চিকিৎসক সুমন পাল প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ফরিদ নামের ওই ব্যক্তি মারা যান। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত ছায়েদ আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে, তা বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে তাঁরা বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছেন।

কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ লুৎফুল রহমান বলেন, শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়ে এক যুবক মারা গেছেন—এমন অভিযোগ পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য আগামীকাল শনিবার সকালে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।