নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে বসেছিল রক্তাক্ত শিশুটি, গলাজুড়ে ছুরির ক্ষত

রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ছাদ থেকে। গত মঙ্গলবারের এই ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।

নির্মাণাধীন একটি ভবনের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে কেউ একজন প্রশ্ন করলেন, ‘জীবিত আছে?’ ছাদে ওঠার পর দেখা গেল এক কোণে বসে আছে ৯-১০ বছর বয়সী এক শিশু। মুখে, জামায় রক্ত। হাতে ধরে থাকা একটা কাপড়ও রক্তে লাল হয়েছে। একজন এসে শিশুটির মুখ তুলে ধরতেই দেখা গেল গলাজুড়ে ছুরির ক্ষত।

চট্টগ্রামের ফয়’স লেক এলাকায় ঘটে যাওয়া এমন ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, লাল গেঞ্জি পরা শিশুটি খুব ক্লান্ত ভঙ্গিতে বসে রয়েছে। তার মুখে চোপ ছোপ রক্ত। এ সময় নানা প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছিল সে। কারা তাকে সেখানে নিয়ে গেছে, কারা হত্যার চেষ্টা করেছে এক এক করে সবই বলে সে। একপর্যায়ে ছেলেটি নুয়ে পড়ে মাটিতে। পরে সেখানে উপস্থিত একজন তাকে কোলে তুলে নিয়ে ছোটেন হাসপাতালের দিকে।    

পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটলেও গতকাল বুধবার রাত থেকে এটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়াতে থাকে। ফয়’স লেক এলাকার একটি নির্মাণাধীন ভবনে তাকে ধরে নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা কাটে তারই সমবয়সী দুই শিশু-কিশোর। পুলিশ তাদের দুজনকেই গ্রেপ্তার করেছে। আহত শিশুটি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশ জানায়, কাঁধে একটি বাক্স ঝুলিয়ে হেঁটে হেঁটে পান–সিগারেট বিক্রি করত ঘটনার শিকার শিশুটি। ওই বাক্সটির দিকে নজর পড়েছিল তার পূর্ব পরিচিত দুই শিশু–কিশোরের। তারা তিনজনই ফয়’স লেক এলাকায় থাকে। পান–সিগারেট বিক্রেতা শিশুটির টাকাপয়সা ও সিগারেটের বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যেই অন্য দুই শিশু–কিশোর এ ঘটনা ঘটনায়।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোখলেসুর রহমান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনা শিকার শিশুটির কাছ থেকে পান-সিগারেটের বাক্সটি কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে হামলাকারী অন্য দুই শিশু-কিশোর। তখন দুই শিশু–কিশোর বঁটি দিয়ে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে তাকে। গলা কেটে তারা পান সিগারেটের বাক্সটি নিয়ে যায়।

পুলিশ কর্মকর্তা মোখলেসুর রহমান আরও বলেন, স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে দেখে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন আছে। পরে পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুই শিশু-কিশোরকে গ্রেপ্তার করে।