সুনামগঞ্জে ধোপাজান নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা

সুনামগঞ্জে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা। আজ রোববার সকালেছবি: প্রথম আলো

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় সুনামগঞ্জের ইজারাবিহীন ধোপাজান (চলতি) নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

সভায় ধোপাজান নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ। তাঁরা বালু লুট বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া সভায় বলেন, সকালে জেলা কোর কমিটির সভায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর পক্ষ থেকে ধোপাজান নদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কার কথা জানানো হয়। তাই আজ থেকে এই নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকবে।

সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল হক বলেন, এখানে বিটি বালু উত্তোলনের নামে কোটি কোটি টাকার বালু লুট হচ্ছে। এ কারণে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সুনামগঞ্জের রাজনৈতিক নেতাদের বদনাম হচ্ছে। এভাবে প্রকাশ্যে বালু লুট চলতে দেওয়া যায় না।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার সভাপতিত্বে এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিত চন্দের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহাম্মেদ, সুনামগঞ্জে বিজিবির ২৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ কে এম জাকারিয়া কাদির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সুনামগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর মল্লিক মো. মইন উদ্দীন, জেলা জামায়াতের আমির তোফায়েল আহমদ খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) করা এক মামলার পর ২০১৮ সাল থেকে নদীটির ইজারা বন্ধ রয়েছে। এরপরও বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হয়েছে। বিশেষ করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে প্রকাশ্যে বালু লুট শুরু হয়। টানা আড়াই মাসে প্রায় ১০০ কোটি টাকার বালু লুট হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

গত আগস্টে ‘লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এক কোটি ২১ লাখ ঘনফুট বালু (বিটি বালু) উত্তোলনের অনুমতি দেয়। প্রতিষ্ঠানটি সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চলমান কাজে এই বালু ব্যবহার করবে বলে জানানো হয়।

তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরবর্তী সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, ধোপাজান নদীতে বিটি বালু নেই; এখানে সিলিকা বালু রয়েছে, যা উন্নতমানের। এখন এভাবে বালু তোলার অনুমতি দিলে এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে।