চোর অপবাদে প্লায়ার্স দিয়ে দিনমজুরের নখ তুলে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

কুমিল্লা জেলার মানচিত্র

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বারপাড়া এলাকায় চোর অপবাদ দিয়ে আল-আমিন (৩২) নামের এক দিনমজুরকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার দুপুরে বারপাড়া ময়নামতি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে এ ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার নির্যাতনের ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি জানাজানি হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন মিলে ওই দিনমজুর শ্রমিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। তিনি ‘পানি, পানি’ বলে চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। নির্যাতনের সময় প্লায়ার্স দিয়ে হাতের আঙুলের নখ তুলে ফেলার চেষ্টা করা হয়।

আহত দিনমজুর আল-আমিন তিন দিন ধরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি বারপাড়া এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আল-আমিন পেশায় দিনমজুর। বারপাড়া এলাকার সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. আশিক (২৮) ও হাফিজ আহমেদের (৩২) নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করার জন্য দৈনিক ৬০০ টাকা মজুরিতে আল-আমিনকে নেওয়া হয়। কিন্তু আশিক তাঁকে ৫০০ টাকা দেন। এতে আল-আমিন আপত্তি করলে আশিক ক্ষিপ্ত হন। পরে আল-আমিন বাড়িতে চলে যান। একপর্যায়ে আশিক ৬০০ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আল-আমিনকে বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে নেওয়ার পর নির্মাণ যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। একপর্যায়ে আশিকের নেতৃত্বে সজল, নয়নসহ এলাকার কয়েকজন মিলে পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আল-আমিনের তিনটি আঙুল থেঁতলে দেন। এ সময় হাফিজ প্লায়ার্স দিয়ে তাঁর নখ তুলে চুরির স্বীকারোক্তি নেওয়ার চেষ্টা করেন। এলাকাবাসী তাঁকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আল-আমিন প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আসার পর তাঁরা তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ঘটনার পর নির্যাতনকারী ব্যক্তিরা এলাকা থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে তাঁদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহাম্মদ সানজুর মোরশেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ভিডিও দেখে আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।