সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারে জামিন পাওয়া আসামিদের সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা বের হওয়ার চেষ্টা করলে কারারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। আজ বুধবার বেলা চারটার দিকে বিক্ষুব্ধ বন্দীরা কারাগারের একটি ফটক ভাঙার চেষ্টা করলে এ সংঘর্ষ বাধে। খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার কামরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, বিকেলে কারাগারের ভেতরে একটু অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। যে কারণে তাঁদের শান্ত করতে গিয়ে তিন-চারজন বন্দী আহত হয়েছেন। তাঁদের কারা হাসপাতালেই চিকিত্সা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো গুরুতর আহত বা নিহতের ঘটনা ঘটেনি।
কারা ফটকের সামনে অবস্থানরত জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের স্বজন ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কারাবন্দী রাজনৈতিক নেতা–কর্মীদের ছেড়ে দেওয়ার সময় তাঁদের সঙ্গে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরাও বের হওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কারারক্ষীদের সঙ্গে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কারাগারের ভেতরে দীর্ঘ সময় গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
বিকেলে সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে কথা হয় স্বজনের মুক্তির অপেক্ষায় থাকা আলেয়া বেগম ও খোকন খানের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ‘আমরা কারাগারের ভেতরে এক নারী কর্মীর কাছে জেনেছি, সংঘর্ষের সময় কারারক্ষীদের গুলিতে কয়েকজন বন্দী নিহত ও গুরুতর আহত হয়েছেন। যে কারণে আদালতের নির্দেশনা আমাদের কাছে থাকা সত্ত্বেও এখন আর আমাদের বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।’
সিরাজগঞ্জ জেলা কারাগারের জেল সুপার কামরুল হুদা বলেন, ‘আমরা মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত তালিকাপ্রাপ্ত ১৫১ জন বন্দীকে ছেড়ে দিয়েছি। আজ দুপুরের পর থেকে ২৩ জন বন্দীকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আর আমাদের কাছে আদালত থেকে আসা কোনো জামিন বা মুক্তি দেওয়ার কোনো তালিকা নেই।’
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, জামিনপ্রাপ্ত আসামিদের মুক্তির খবরে সাজাপ্রাপ্ত হাজতিরাও সংঘবদ্ধভাবে বের হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু কারারক্ষীরা তা প্রতিহত করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি সেনা কর্মকর্তাদের খবর দেওয়া হয়। কারাগারের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।