পঞ্চগড়ে ছয় মাসের মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড

আদালত
প্রতীকী ছবি

পঞ্চগড়ে ছয় মাস বয়সী মেয়েকে হত্যার দায়ে নাজিমুল হক ওরফে নাজমুল (৩৪) নামের এক বাবাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আনিসুর রহমান এ আদেশ দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও পঞ্চগড় জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নাজিমুল হক একজন পাথরশ্রমিক এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের শিংরোড-জয়ধরভাঙ্গা এলাকার জয়নুল হকের ছেলে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবীব প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই রায়ে আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’

আদালতের নথি সূত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালে নাজিমুল হকের সঙ্গে একই এলাকার রশিদুল ইসলামের মেয়ে রশিদা আক্তারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির পরপর তিনটি মেয়েসন্তানের জন্ম হওয়ায় তাঁদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ গভীর রাতে ঝগড়া শুরু হলে নাজিমুল হক তাঁর স্ত্রীকে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন।

চিৎকার শুনে তাঁদের মেয়ে নাজিরা (৮) ও রিয়ামনি (৫) ঘুম থেকে উঠে মাকে জড়িয়ে ধরে। এ সময় নাজিমুল হক ওই অস্ত্র দিয়ে মেয়ে দুটিকেও কুপিয়ে জখম করেন। একপর্যায়ে তাঁদের ছয় মাস বয়সী মেয়ে রত্না কান্নাকাটি শুরু করলে নাজিমুল হক তাকে হত্যার পর পালিয়ে যান।

পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রশিদা আক্তারের বাবার বাড়ির লোকজন তাঁকে ও গুরুতর আহত দুই মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঘটনার পরদিন ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল নাজিমুল হক, তাঁর বাবা জয়নুল হক ও মা নাসিমা খাতুনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা করেন তাঁর শ্বশুর রশিদুল ইসলাম।

মামলায় নাজিমুল হকের বিরুদ্ধে ছয় মাস বয়সী মেয়ে রত্নাকে আঘাত করে হত্যা এবং স্ত্রীসহ অপর দুই মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ আনা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভবেশ চন্দ্র পাল ২০২০ সালের ৩১ অক্টোবর নাজিমুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ায় ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।