মৌলভীবাজারে বিপন্ন বাগাড় মাছ বিক্রি করায় জরিমানা

মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিম বাজার থেকে বাগাড় মাছটি জব্দ করা হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায়
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারে বিপন্ন প্রজাতির বাগাড় মাছ বিক্রি করায় এক মাছ বিক্রেতাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে মাছটি জব্দ করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিম বাজারে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং মৌলভীবাজার সদর উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজার সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম ছারওয়ার, বর্ষিজোড়া বিট কর্মকর্তা আবু নইম মো. নুরুন্নবী প্রমুখ।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিলে বাগাড় মাছকে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। এদিকে বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্ত) আইন, ২০১২ অনুযায়ী বিপন্ন প্রাণী ধরা বা কেনাবেচা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) লাল তালিকায় রয়েছে বাগাড় মাছ।

তবে মাছটি আকারে বেশ বড় হওয়ায় অনেকের কাছে লোভনীয়। প্রায়ই মৌলভীবাজার শহরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে বাগাড় মাছ কেটে কেজি দরে বিক্রি করতে দেখা যায়।

গতকাল বিকেলে মৌলভীবাজার শহরের পশ্চিম বাজারে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের একটি বাগড় বিক্রির জন্য নিয়ে আসা হয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন সেখানে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় আলী মিয়া নামের এক মাছ বিক্রেতাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে মাছটি জব্দ করে কেরোসিন ঢেলে খাওয়ার অনুপযোগী করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজার সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা গোলাম ছারওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্য প্রাণী আইনে বাগাড় মাছ ধরা ও বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। এত দিন অন্যান্য বিপন্ন প্রাণীর দিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাই বাগাড়ের ক্ষেত্রে আইনটি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। তবে এখন থেকে এ বিষয়ে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। বাজারে অনেকে বাগাড় মাছের পোনা বিক্রি করছেন বলে আমরা জেনেছি। এটাও একই ধরনের অপরাধ। বাগাড় ধরা ও বিক্রির বিষয়ে সবাইকে নিরুৎসাহিত করতে মৌলভীবাজারে মাইকিং করে সচেতনতা চালানো হবে।’