কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতককে বিকল্প পরিবার হিসেবে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক আরিফুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন আক্তার, কুষ্টিয়া সমাজসেবা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক মুরাদ হোসেন প্রমুখ।
এ সময় জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম বলেন, নবজাতককে নিতে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডে ১৪টি আবেদন জমা পড়ে। সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়ে উপযুক্ত এক দম্পতির কাছে তাকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই তাঁদের কাছে নবজাতককে হস্তান্তর করা হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ৭ সেপ্টেম্বর সকাল সাতটার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক নারী আসেন। নিবন্ধন বইতে তিনি নিজের নাম রিমি, বয়স ২৬, স্বামী/বাবার নামের জায়গায় মোমিন এবং ঠিকানা কবুরহাট, জগতি, কুষ্টিয়া লেখেন। দায়িত্বরত চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান তাঁকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তির জন্য বললে তিনি রাজি হননি। পরে তাঁকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।
সকাল পৌনে আটটার দিকে পেটের ব্যথা তীব্র হলে তাঁকে গাইনি বিভাগের অস্ত্রোপচারকক্ষে নেওয়া হয়। সেখানে স্বাভাবিকভাবে ছেলেসন্তান জন্ম দেন তিনি। আধা ঘণ্টা পর তাঁকে ওয়ার্ডে দেওয়া হয়। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যান ওই প্রসূতি। বর্তমানে নবজাতককে হাসপাতালের নার্সরা সেবা দিচ্ছেন।
এ নিয়ে ঘটনার পরের দিন ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনে ‘হাসপাতালে নবজাতক ফেলে পালিয়েছেন মা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, আবেদনকারীদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, প্রবাসী, চিকিৎসক, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ছিলেন। গত বুধবার সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আবেদন করা দম্পতিদের সরাসরি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ মুরাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৩ সালের (২০১৮ সংশোধিত) শিশু আইন অনুযায়ী এক দম্পতির কাছে নবজাতককে দেওয়া হচ্ছে।