রাজশাহীর সাবেক কমিশনারসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলার আবেদন

পুলিশি নির্যাতনে স্বামীর হত্যার অভিযোগে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) সাবেক কমিশনার মো. শামসুদ্দিনসহ পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী। ঘটনার সাত বছর পর আজ বুধবার মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ আবেদন করেন মর্জিনা রহমান (৫০) নামের এক নারী। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার উপশহর এলাকায়।

মামলার আরজিতে সাবেক কমিশনার ছাড়াও বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন খন্দকার, নগর পুলিশ গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তৎকালীন পরিদর্শক আশিকুর রহমান ও বোয়ালিয়া থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত চার থেকে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়। তাঁদের মধ্যে সাবেক পুলিশ কমিশনার মো. শামসুদ্দিন ২০২০ সালের শেষের দিকে অবসরে গেছেন। অন্যদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোসাব্বিরুল ইসলাম বলেন, আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। এরপর পর্যালোচনা করে একটা আদেশ দেবেন। এখনো মামলা আমলে নেওয়া বা আদেশ দেওয়া সম্পর্কে আদালত কিছু বলেননি।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি মর্জিনা রহমানের স্বামী আইনুর রহমান ওরফে মুক্তার বিরুদ্ধে বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় ২৭ জানুয়ারি আইনুর রহমানকে উপশহর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়। সেদিনই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ গুরুতর আহত আইনুর রহমানকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ সদস্যরা স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করলেও দাফন না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা পাহারায় ছিলেন।

বাদীর আইনজীবী মাইনুল আহসান প্রথম আলোকে বলেন, বাদীর স্বামীর বিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় গ্রেপ্তারের পর তাঁকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করছেন। এ জন্য হেফাজতে মৃত্যুর আইনে তিনি (বাদী) আদালতে মামলার আবেদন করেছেন।

ঘটনার সাত বছর পর কেন মামলার আবেদন করা হলো, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল আহসান বলেন, বাদী এসে মামলা দিয়েছেন, তিনি আইনজীবী হিসেবে আদালতে জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া তথ্য-উপাত্ত খোঁজ করতে দেরি হয়েছে বলে আরজিতে বলা হয়েছে। এখন আদালতের ব্যাপার। তবে এ বিষয়ে আদালত এখনো কোনো আদেশ দেননি।