হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে মামলা হয়নি, নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে

হবিগঞ্জে সংঘর্ষকালে বিএনপির দুই কর্মীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় গতকাল শনিবার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

হবিগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় আজ রোববার বেলা ১১টা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে থাকার কথা জানিয়েছেন। এদিকে এ ঘটনায় গুরুতর আহত হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেবকে আজ সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষকালে তিনি চোখের নিচে আঘাত পান।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করে। বিকেল ৫টার দিকে সমাবেশস্থল থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জি কে গউছের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়কে আসামাত্রই পুলিশ বাধা দেয়।

এ নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একসময় উভয় পক্ষ মারমুখী হয়ে উঠলে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। পাশাপাশি কাঁদানে গ্যাসের শেলও ছুড়ে। থেমে থেমে এই সংঘর্ষ চলে প্রায় দুই ঘণ্টা। শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকে সংঘর্ষের পুরোটা সময়।

হবিগঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ সদর) খলিলুর রহমানের দাবি, সংঘর্ষকালে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার সদ্য নিযুক্ত ওসি অজয় চন্দ্র দেব, উপরিদর্শক (এসআই) খুর্শেদ আলমসহ ৩০ থেকে ৩৫ জন সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ওসির চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে আজ সকালে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত এসআই খুর্শেদ আলম তাঁদের হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জি কে গউছের দাবি, তাঁদের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দেড় শতাধিক গুলিবিদ্ধ। ঘটনার পর থেকে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হতে পারে বলে তাঁর আশঙ্কা।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. বদিউজ্জামান প্রথম আলোক বলেন, এখনো কোনো মামলা হয়নি। কেউ গ্রেপ্তারও হননি।