জামালপুরে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ওপর হামলা, নৌকার ক্যাম্পে আগুন

জামালপুরে হামলায় আহত নৌকার সমর্থকদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। বুধবার বিকেলে জরুরি বিভাগের সামনেছবি: প্রথম আলো

জামালপুর-৫ (সদর) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদের (নৌকা) সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। একই সময় নৌকা প্রতীকের একটি নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

আজ বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের কৈডোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. রেজাউল করিমের (ঈগল) সমর্থকদের বিরুদ্ধে ওই হামলার অভিযোগ উঠেছে। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

হামলায় নৌকা প্রতীকের চারজন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন মাসুদ মিয়া (৩৩), মারুফ হোসেন (২৩), জাকির হোসেন (৩৫) ও নিয়ামত আলী (৭০)। নিয়ামত আলী শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তাঁদের সবার বাড়ি কৈডোলা এলাকায়। তাঁদের সবাইকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, গুরুতর জখম অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের হাতের একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়েছে। অন্য একজনের ছুরিকাঘাত ও আরেক জনের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন আছে। তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের কৈডোলা হক দাখিল মাদ্রাসার সামনে নৌকা প্রতীকের প্রচার ক্যাম্পে ১০-১২ জন সমর্থক বসে ছিলেন। তখন ওই ক্যাম্পের সামনে দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিমের সমর্থকেরা একটি মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। মিছিল থেকে নৌকার সমর্থকদের উদ্দেশে স্লোগান দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা নৌকার সমর্থকদের ওপর হামলা করেন এবং নৌকার প্রচার ক্যাম্পে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেন। এ ঘটনায় চারজন আহত হন। তাঁদের জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শাহবাজপুর ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের নির্বাচন সমন্বয়কারী দলের সদস্য হৃদয় আকন্দ সাংবাদিকদের বলেন, ঈগল প্রতীকের সমর্থকেরা হামলা চালিয়ে তাঁদের সমর্থকদের মারধর করেছেন। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁদের (নৌকা প্রতীক) সমর্থকদের আঘাত করেছেন। তাঁরা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

অভিযোগের বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহবাজপুর এলাকার বেশির ভাগ ভোটার আমার পক্ষে চলে আসছেন। বিষয়টি নৌকার সমর্থকেরা বুঝতে পেরে নিজেরাই নিজেদের প্রচারকেন্দ্র ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। যাতে আমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে পারে। নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির জন্যই তাঁরা (নৌকার সমর্থকেরা) এসব করছেন।’

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মহব্বত কবীর প্রথম আলোকে বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়। এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। ওই ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামালপুর-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের আটজন মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ দলীয় মনোনয়ন পান। মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল করিম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। তাঁরা দুজন ছাড়াও এ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু সায়েম মোহাম্মদ, জাতীয় পার্টির মো. জাকির হাসেন, জাতীয় পার্টির (জেপি) মো. বাবর আলী খান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. রফিকুল ইসলাম ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) মো. সাবিরুজ্জামান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।