অবশেষে মায়ের কোলে ফিরল জামালপুরের সেই নবজাতক

হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটিকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

২৮ দিন বয়সী এক নবজাতককে নিয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন এক দরিদ্র দম্পতি। দুই দিন চিকিৎসার পর হাসপাতালের এক রোগীর স্বজনের কাছে নবজাতকটিকে রেখে মা-বাবা চলে যান। তাঁদের ‍খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আট দিন পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নবজাতকটিকে তার মা-বাবার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটিকে মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক রাজু আহমেদ, শিশুকল্যাণ বোর্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নবজাতকের শ্বাসকষ্ট ও ওজন কমজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করান মা ও নানি। দুই দিন চিকিৎসার পর ১ মার্চ শিশুটিকে হাসপাতালের বারান্দায় এক নারীর কাছে রেখে চলে যান তাঁরা। পরে শিশুটির স্বজনেরা না এলে ওই নারী হাসপাতালের নার্সদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শিশুটিকে তাঁদের কাছে দিয়ে দেন। ৩ মার্চ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। শিশুটির মা-বাবা শিশুটিকে নিতে ৪ মার্চ আবার হাসপাতালে আসেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের কাছে প্রমাণ চাইলে মা-বাবা প্রমাণ দেন।

শিশুটির মা রোকসানা আক্তার বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা করতে এসে আমার মেয়েকে রেখে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলাম। পরে এ ঘটনা ঘটে। আজ মেয়েকে কোলে ফিরে পেয়েছি। মেয়েকে ফিরে পেয়ে আমি খুবই খুশি।’

শিশুটির বাবা আবদুল কাদের জিলানি বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম। আমাদের বাড়ি সরিষাবাড়ীতে। মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর সময় ঠিকানা দিয়েছিল আমার শাশুড়ির। তাই আরও বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়। সাত-আট দিন দৌড়াদৌড়ির পর আজ মেয়েকে ফিরে পেলাম।’

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, শিশুটিকে ভর্তির সময় যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল, সেই ঠিকানায় প্রথমে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে শিশুটিকে হাসপাতালের নার্সরাই সেবা দিচ্ছিলেন। জানাজানি হওয়ার পর তাঁরা এসে শিশুটি তাঁদের বলে দাবি করেন। কিন্তু তখনই বাচ্চাটি দেওয়া হয়নি। খোঁজখবর ও সঠিক প্রমাণ পাওয়ার পর আজ তাঁদের কাছে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শিশুটি এখন সুস্থ।