দেড় বছর আগে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উপনির্বাচনে ভোট গণনায় দুজন প্রার্থী সমান ভোট পেয়েছিলেন। সে সময় লটারি করে নির্বাচন কর্মকর্তা একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। হেরে যাওয়া প্রার্থী বিষয়টি না মেনে নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করেন। শেষমেশ আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালত আজ সোমবার আবার সেই ভোট গণনা করেন। তাতে দেখা যায় যে পরাজিত প্রার্থী ২১৪ ভোট বেশি পেয়েছেন। কুষ্টিয়ার নির্বাচনী ট্রাইবুন্যালে (জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালত) এই ভোট গণনা হয়।
গত বছরের ৯ মার্চ এই ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় লটারিতে বিজয়ী হয়েছিলেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী আবদুল মান্নান বিশ্বাস (স্বতন্ত্র)। এবার বিজয়ী হলেন মোটরসাইকেল প্রতীকের ফারুক আলম (স্বতন্ত্র)।
এ তথ্য নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ আদালতের (সদর) নাজির মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুজন প্রার্থী ও তাঁদের আইনজীবীদের সামনে ভোট গণনা করা হয়েছে। মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী ২১৪ ভোট বেশি পেয়েছেন।
২০২৪ সালের ৯ মার্চ রিফায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। বেশির ভাগ প্রার্থী আওয়ামী লীগের রাজনীতির (বর্তমানে কার্যক্রম স্থগিত) সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রাথমিক বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী, মোট ভোটার ২৫ হাজার ৮৪৬ ভোটের মধ্যে বৈধ ভোট পড়ে ১৭ হাজার ৮১৩ ভোট। বাতিল হয় ১১৩ ভোট। প্রার্থীদের মধ্যে ঘোড়া প্রতীকের আবদুল মান্নান বিশ্বাস (স্বতন্ত্র) ও মোটরসাইকেল প্রতীকের ফারুক আলম (স্বতন্ত্র) দুজনই সমান ৬ হাজার ১২৩ ভোট পান।
সমান ভোট পাওয়ায় ওই দিন রাত একটার দিকে তৎকালীন জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু আনছার স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০–এর বিধি ৪১ (৬) মোতাবেক দুজন প্রার্থীর মধ্যে লটারি করেন। লটারিতে ঘোড়া প্রতীকের আবদুল মান্নান বিশ্বাস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
লটারিতে হেরে যাওয়ার পর আদালতের দ্বারস্থ হওয়া ফারুক আলম প্রথম আলোকে বলেন, ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলার পর দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ২৪ আগস্ট আদালত সিদ্ধান্ত দেন যে আবার ভোট গণনা করা হবে। এ জন্য আজ সোমবার দিন ধার্য ছিল। সেই মোতাবেক দুই প্রার্থী ও তাঁদের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে আদালতে পুনরায় ব্যালট পেপারগুলো গণনা করা হয়। গণনায় তাঁর ভোট বেড়েছে ২১৪টি।
ফারুক আলমের আইনজীবী শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খোলা আদালতে ভোট গণনা হয়। গণনা শেষে আদালত বাদী ফারুক আলমকে ২১৪ ভোট বেশি পাওয়ায় বিজয়ী ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে আবদুল মান্নানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাঁর আইনজীবী জিহাদুল ইসলাম বলেন, ‘বিবাদী আবদুল মান্নান এখন কী করবেন, সেটা এখনো আমি জানি না।’