কালভার্ট ভেঙে শ্রীমঙ্গল উপজেলা শহরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। গত সোমবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের কালীঘাট চা–বাগানের ১৬ নম্বর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি কালভার্ট ভেঙে কালীঘাট ১৬ নম্বর এলাকার সড়ক যোগাযোগ ছয় দিন ধরে বন্ধ আছে। এতে চা, লেবু, আনারস ও পান শহরে পৌঁছাতে না পেরে কৃষক ও বাগানমালিকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। স্থানীয় লোকজনের উপজেলা শহরে আসতে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। সেই সঙ্গে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।

নন্দরানী চা–বাগানের শ্রমিক রেনু নায়েক বলেন, শ্রীমঙ্গল শহর থেকে তাঁদের এলাকায় আসার রাস্তাটি দীর্ঘদিন থেকে কালীঘাট চা–বাগান থেকে খুবই খারাপ অবস্থায় আছে। এর মধ্যে গত শনিবার কালভার্টটি ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। কালভার্টটি দীর্ঘদিন ধরে নড়বড়ে ছিল।

উপজেলার কালীঘাট চা–বাগানের কালীঘাট-ধলই সড়কের কালীঘাট ১৬ নম্বর এলাকায় গত শনিবার সকালে মাটি ধসে দীর্ঘদিন থেকে নড়বড়ে থাকা কালভার্টটি ভেঙে পড়ে। ১৫ আগস্ট সরেজমিনে দেখা যায়, কালভার্টটি ভেঙে খালে পড়ে আছে। রাস্তা বন্ধ হওয়ায় দুই দিক থেকে আসা বিভিন্ন যানবাহন ভাঙা কালভার্টের সামনে এসে থামছে। লোকজন যানবাহন থেকে কালভার্টের নিচে খাল দিয়ে পিচ্ছল পথ ধরে এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাচ্ছেন। অনেক কষ্ট করে খালের নিচ দিয়ে সাইকেল ও মোটরসাইকেল নিয়ে পার হচ্ছেন আরোহীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার একই পরিস্থিতি থাকার কথা জানা যায়।

লেবু ও আনারসবাগানের মালিক ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বাগান থেকে লেবু আনারস, নাগা মরিচ ও পান নিয়ে যেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। রাস্তা বন্ধ থাকায় গাড়ি চলাচল করছে না। এ কারণে বাগানে উৎপাদিত লেবু, আনারস, নাগা মরিচ ও কলাগাছেই নষ্ট হচ্ছে।’

ছয় দিন ধরে কালভার্টটা ভেঙে রাস্তা বন্ধ থাকার কথা জানিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মানিক মিয়া বলেন, এখন পর্যন্ত কালভার্ট ঠিক করার কোনো উদ্যোগ দেখা গেল না। অটোরিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পাচ্ছেন না। এমন একটা পরিস্থিতিতে মধ্যে আছেন, বিকল্প কোনো সড়কও নেই।

ভেঙে পড়ার পর কালভার্টের নিচে থাকা গ্যাসলাইনে সমস্যা হয় বলে জানালেন জঙ্গলবাড়ি চা–বাগানের ব্যবস্থাপক এস এন এম মাহবুব আলম মিছবাহ্। তিনি বলেন, ‘গত রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চা–বাগানের নিজস্ব খরচে আমরা কালভার্টের ভাঙা অংশ সরানোর পর গ্যাস চালু হয়। এখন কালভার্ট ভেঙে পড়ার কারণে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ আছে। মানুষ অনেক কষ্ট করে চলাচল করছে।’ তিনি আরও বলেন, এমনিতেই চা–বাগানে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে বাগান বন্ধ, এখন রাস্তা না থাকার কারণে জঙ্গলবাড়ি চা–বাগান, নন্দরানী চা–বাগান, বিলাশছড়া চা–বাগান, হোসনাবাদ চা–বাগানের উৎপাদিত চা বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে পারছেন না। এভাবে চললে তাঁরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ জায়গাটি তিনি পরিদর্শন করেছেন। আপাতত চা–বাগান কর্তৃপক্ষকে বাঁশ দিয়ে যাতায়াতের জন্য অস্থায়ীভাবে কিছু তৈরি করার জন্য বলা হয়েছে। তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন। বরাদ্দ এলে এখানে স্থায়ীভাবে একটি সেতু তৈরি করে দেওয়া হবে।