১৮ বছর পর নিজের রিকশার চাকা ঘোরাতে পারলেন ‘বারেক মামা’

‘একটি ভালো কাজ’– এর অংশ হিসেবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুসভার পক্ষ থেকে রিকশাচলক মোহাম্মদ বারেককে একটি রিকশা উপহার দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাসেছবি: প্রথম আলো

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ভাড়া করা রিকশা চালান মোহাম্মদ বারেক। ক্যাম্পাসে তিনি ‘বারেক মামা’ নামে পরিচিত। ষাটোর্ধ্ব বারেক মামার দৈনিক যা আয় হয়, তার একটি অংশ মালিকপক্ষকে দিতে হয়। এই স্বল্প আয়ে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তিনি।

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘একটি ভালো কাজ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বারেক মামাকে শাবিপ্রবি বন্ধুসভার পক্ষ থেকে একটি রিকশা উপহার দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে বারেক মামার হাতে রিকশাটি হস্তান্তর করেন আমন্ত্রিত অতিথি, উপদেষ্টা ও বন্ধুসভার সদস্যরা।

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘একটি ভালো কাজ’– এর অংশ হিসেবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুসভার পক্ষ থেকে রিকশাচলক মোহাম্মদ বারেককে এই রিকশাটি উপহার দেওয়া হয়। শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে
ছবি: প্রথম আলো

মোহাম্মদ বারেক জানান, প্রতিদিন রিকশাভাড়া বাবদ ৮০ টাকা করে মালিকপক্ষকে দিতে হয়। এরপর রোজগারের বাকি টাকা দিয়ে কোনোরকম সংসার চালান। স্বামী, স্ত্রী এবং চার সন্তান নিয়ে ছয়জনের সংসার তাঁর। গত ১৮ বছর শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসেই ভাড়া করে আনা রিকশা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। রিকশা পেয়ে শিক্ষার্থীদের বারেক মামা বলেন, ‘এ রকম আনন্দ কখনো পাইনি। এইটা আমার জীবনের বড় উপহার। এই রিকশা চালিয়ে এখন সংসারের কষ্ট কমবে। নিজের রিকশা হবে এটা স্বপ্ন ছিল।’

আয়োজকেরা জানান, শাবিপ্রবি বন্ধুসভার উপদেষ্টা ও বন্ধুদের সহযোগিতায় ‘একটি ভালো কাজ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিকশাটি কেনা হয়। নাম দেওয়া হয় ‘বন্ধু পরিবহন’। মোহাম্মদ বারেক জানতেন না তাঁকে রিকশা উপহার দেওয়া হবে। তিনি এই রিকশা উপহার পেয়ে অনেক খুশি হয়েছেন।

বারেককে রিকশা হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন বন্ধুসভার উপদেষ্টা অধ্যাপক জায়েদা শারমিন, অধ্যাপক মো. সাহাবুল হক, প্রথম আলোর শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নোমান মিয়া ও বন্ধুসভার সদস্যরা৷

এই মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করে সাহাবুল হক বলেন, এটি একটি মহৎ ও দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ, যা বন্ধুসভার মানবিক চেতনা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিফলন ঘটায়। ভবিষ্যতেও বন্ধুসভা সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে এবং সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জায়েদা শারমিন বলেন, এই উদ্যোগ টেকসই সমাধানের একটি প্রতিচ্ছবি। শাবিপ্রবি বন্ধুসভার এ ধরনের কাজ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা জোগায়।