মেরামতের সামর্থ্য নেই, ঝড়ে বিধ্বস্ত ঘরে পরিবার নিয়ে থাকছেন ভ্যানচালক আনন্দ

ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের ভেতর দাঁড়িয়ে আছেন আনন্দ দাস ও তাঁর স্ত্রী রিপা রানী দাস। গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলেসহ পাঁচ সদস্যের পরিবার নিয়ে টিনের এক ঘরে বাস করেন ষাটোর্ধ্ব আনন্দ দাস। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার কালবৈশাখীতে ঘরটি ভেঙে পড়েছে। আজ শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওই বিধ্বস্ত ঘরের নিচেই দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামে আনন্দ দাসের বাড়ি। ভ্যান চালিয়ে তিনি সংসার চালান। আড়াই শতক জমির ওপর টিনের ঘর তুলে দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। তবে আর্থিক সংকটের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরটি মেরামত করতে পারছেন না। ফলে এসএসসি পরীক্ষার্থী এক মেয়েসহ পরিবার নিয়ে আনন্দ দাস নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

আনন্দ দাস প্রথম আলোকে বলেন, নিজের সম্পদ বলতে আড়াই শতক বাড়ির জায়গা। ভ্যান চালিয়ে সন্তানদের পড়ালেখাসহ পরিবারের খরচের জোগান দেন। এ কারণে ছেলেমেয়েদের থাকার জন্য আলাদা ঘর নির্মাণ করতে পারেননি। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝড়ের সময় ঘরটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন ঝড়–বৃষ্টি উপেক্ষা করেই সেখানে কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঝড়ের সময় আনন্দ দাসের একমাত্র ঘরটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়
ছবি: প্রথম আলো

আনন্দ দাসের স্ত্রী রিপা রানী দাস বলেন, তাঁর স্বামীর অল্প আয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। এর মধ্যে তাঁর বড় মেয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। মেজ মেয়ে নবম শ্রেণিতে আর একমাত্র ছেলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে তাঁদের হিমশিম খেতে হয়। কিছুদিন আগে একটি মাত্র গরু বিক্রির করে সেই টাকা দিয়ে তাঁর স্বামীর চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন বিধ্বস্ত ঘরটি মেরামতের উপায় নেই তাঁদের।

মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল বারী বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। তিনি খোঁজ নিয়ে সাহায্যের চেষ্টা করবেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবদুল হান্নান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরিবারটির কাছ থেকে একটি আবেদন নেওয়া হয়েছে। ঘরটি মেরামতের জন্য টিন চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠানো হয়েছে।