রাজশাহীতে কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে তেঁতুলগাছের ‘খাইট্টা’

আগামী বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল আজহা। কোরবানির ঈদে আনুষঙ্গিক উপকরণের মধ্যে অন্যতম কাঠের তৈরি ‘খাইট্টা’। ঈদের আগে আগে এই খাইট্টার চাহিদা বেড়ে যায়। এগুলোর বেশির ভাগই তেঁতুলগাছের তৈরি। রাজশাহীতে এই খাইট্টা বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে।

তেঁতুলকাঠ অপেক্ষাকৃত শক্ত। তাই মাংস কাটার কাজে এ কাঠের খাইট্টা ব্যবহার করে থাকেন কসাইরা। সাধারণ মানুষও এই খাইট্টা কিনে থাকেন। সারা বছর খাইট্টার ব্যবহার থাকলেও কোরবানি ঈদের মৌসুমে চাহিদা বেড়ে যায়। ঈদের আগে শহরের মোড়ে মোড়ে খাইট্টা বিক্রি করতে দেখা যায়।

রাজশাহী নগরের বিনোদপুর এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে তেঁতুলকাঠের খাইট্টা বিক্রি করতে দেখা গেল। এ ছাড়া নগরের তালাইমারীতেও দেখা গেল একই ধরনের খাইট্টা বিক্রি করতে। ২০ বছর ধরে এই বিনোদপুরে ঈদ মৌসুমে খাইট্টা বিক্রি করেন মিজানুর রহমান ও তাঁর বাবা আমজাদ হোসেন। গতকাল সোমবার মিজানুরকে সেখানে খাইট্টা পসরা সাজিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে। মিজানুরের কাছে ১৬০ টাকা থেকে ৪৪০ টাকার পর্যন্ত বিভিন্ন আকৃতির খাইট্টা পাওয়া যাচ্ছে।

মিজানুরের বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার মাসকাটাদীঘি এলাকায়। তাঁদের খড়ির ব্যবসা আছে। ঈদ মৌসুমে তাঁরা তেঁতুলকাঠ থেকে খাইট্টা বানিয়ে বিক্রি করেন। তিনি বলেন, তাঁর বাবা ২০ বছর আগে থেকে কাঠ-খড়ির ব্যবসা করেন। কোরবানির ঈদ এলেই তাঁরা তেঁতুলকাঠের খাইট্টা বিক্রি করেন। প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে বিক্রি করেন তাঁরা। রাজশাহী শহরে যাঁরা গরু কোরবানি দেন, তাঁরাই তাঁদের ক্রেতা।

মিজানুরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আগের চেয়ে তেঁতুলগাছ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। তেঁতুলগাছ পাওয়াই যায় না। তেঁতুলগাছের কাঠ দিয়ে আসবাব হয় না। লাকড়ি বানানো হয়। ফলে নতুন করে এই গাছ লাগানোর ব্যাপারে মানুষের তেমন আগ্রহ নেই।

বিনোদপুরেই খাইট্টা নিয়ে বসেছেন আসাদুল ইসলাম। তিনি সারা বছর খড়ির ব্যবসা করেন। প্রতি কোরবানির ঈদে খাইট্টার চাহিদা থাকায় তিনি এই ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, গাছের মধ্যে তেঁতুলের কাঠ শক্ত। অন্য গাছের কাঠের তৈরি খাইট্টা ধারালো অস্ত্রের আঘাতে টুকরা টুকরা হয়ে যায়। দায়ের সঙ্গে লেগে যায়। এ জন্য মাংস কাটার কাজে তেঁতুলকাঠের খাইট্টা মানুষের পছন্দ।

বিনোদপুর এলাকায় এক ব্যক্তি ভ্যানে তেঁতুলকাঠের খাইট্টা তুলে নিচ্ছিলেন। ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম বলেন, এটার ওজন ১১ কেজি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক কিনে নিয়ে যেতে বলেছেন। তাই তিনি কিনে ওই শিক্ষকের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।