মোরগলড়াই, বিস্কুটদৌড় দেখে দর্শকের উল্লাস

গ্রামীণ খেলা মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতায় শিশুরা। মঙ্গলবার খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের চরে
ছবি: প্রথম আলো

কপোতাক্ষের চর ঘিরে বানানো হয়েছে মাঠ। মাঠের চারদিকে উৎসুক দর্শকের উল্লাস। মাঝখানে গোল হয়ে এক পায়ে দাঁড়িয়ে অন্য পা ভাঁজ করে দুই হাত দিয়ে পেছনের দিকে ধরে রেখেছে শিশুরা। ভাঁজ করা পা দিয়ে একে অপরকে আঘাত করে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা। খেলাটির নাম ‘মোরগলড়াই’। একে একে প্রতিযোগীদের হাত ফসকে পা নিচে নেমে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত যে টিকে থাকবে, সে-ই হবে বিজয়ী। এ দৃশ্য দেখে আনন্দে হাততালি দিচ্ছেন দর্শকেরা।

মাঠের আরেক পাশে দেখা যায়, দড়িতে ঝুলছে বিস্কুট। বিস্কুটগুলো সুতা দিয়ে পেঁচিয়ে দড়িতে ঝোলানো। একটু দূরে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে শিশুরা। সবার হাত পেছন থেকে বাঁধা। একজন বাঁশিতে ফুঁ দিতেই শিশুরা দৌড়ে বিস্কুটের কাছে এসে মুখ দিয়ে বিস্কুট নিয়ে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছে। যে সবার আগে বিস্কুট নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবে, সে বিজয়ী।

গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব খেলা দেখতে ঢল নামে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে খুলনার কয়রা উপজেলা সদরের কপোতাক্ষ নদের চরে এমন খেলার আয়োজন করা হয়। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গোবরা বন্ধন তরুণ সংঘের উদ্যোগ এটি। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব খেলা দেখতে ঢল নামে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের।

শিশুদের মোরগলড়াই ও বিস্কুটদৌড় প্রতিযোগিতার পাশাপাশি দড়িলাফ, কাঁকড়াদৌড়ে, উচ্চ লাফ, বাজনার তালে তালে আসন গ্রহণ, মেধা যাচাই, যেমন খুশি তেমন সাজ, বেলুন রক্ষা খেলাসহ আরও বেশ কিছু খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মাঠে খেলা দেখতে আসা গোবরা গ্রামের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘বারবার নদীভাঙনে বিপর্যস্ত কয়রার মানুষকে কিছু সময়ের জন্য আনন্দ দিয়ে দুঃখ ভোলাতে এমন আয়োজন প্রশংসার দাবি রাখে। আমি ছোট ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে খেলা দেখতে এসেছি। অনেক আনন্দ পেয়েছি।’

খেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি আশিক বিল্লাহ বলেন, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কয়রার মানুষকে সুস্থ বিনোদন দিতেই এলাকার যুবকদের উদ্যোগে এমন খেলার আয়োজন করা হয়েছে। শিশুদের বিস্কুটদৌড়, মোরগলড়াইয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী খেলা অংশগ্রহণকারী শিশু ও দর্শক উভয়কেই বেশ আনন্দ দিয়েছে। খেলা শেষে আমন্ত্রিত অতিথিরা বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন।