পাটুরিয়ায় গাড়ির অপেক্ষায় ফেরি, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও চাপ কম

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে গতকাল মঙ্গলবার যানবাহনের চাপ ছিল। ছিল যাত্রীদের ভিড়। ঈদের এক দিন আগে ঘাটে যানবাহন নেই বললেই চলে । আজ বুধবার দুপুরে পাটুরিয়ার তিন নম্বার ঘাট এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট ছিল বেশ সরব। হাজার হাজার যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ছিল ব্যাপক শোরগোল। লঞ্চঘাটেও ছিল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। তবে ঈদের এক দিন আগে আজ বুধবার পাটুরিয়া ঘাটের চিত্র পাল্টে গেছে। আজ সকাল থেকে ফেরিগুলোকে যানবাহনের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। যাত্রীর সংখ্যাও কম।

এদিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও ব্যস্ততা কমে গেছে। মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশে খুব কমসংখ্যক যানবাহন চলাচল করতে দেখা দেছে। তবে এখনো যাত্রীরা বাড়ি যাচ্ছেন, তবে সংখ্যায় তা খুব কম।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় এবং ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ পাটুরিয়া ঘাট হয়ে গ্রামের বাড়ি যাতায়াত করেন। গত এক সপ্তাহ পাটুরিয়া ঘাট হয়ে গ্রামের বাড়িতে যেতে শুরু করেন ঈদে ঘরমুখী মানুষ। গত সোমবার দুপুরের পর থেকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের ব্যাপক চাপ বেড়ে যায়। লোকাল বাসের যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ পড়ে ফেরি ও লঞ্চে। এতে ফেরি ও লঞ্চের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল। তবে গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে যাত্রী ও নদী পারাপারে দূরপাল্লার বাসের চাপ কমতে থাকে। আজ সকালে যাত্রী ও যাত্রীবাহী বাসের চাপ একেবারেই কমে যায়। এর পর থেকে নদীপারের অপেক্ষায় থাকা পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে পারাপার করা হয়।

সূত্র আরও জানায়, এবার ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ছোট-বড় ১৫টি ফেরি এবং পাটুরিয়া-কাজীরহাট নৌপথে ৫টি ফেরি চলাচল করছে। এ ছাড়া পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ২০টি লঞ্চ এবং আরিচা-কাজীরহাট নৌপথে ১২টি লঞ্চ ও ৪১টি স্পিড বোট দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া লঞ্চঘাটেও গতকাল যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। কিন্তু আজ লঞ্চঘাট অনেকটাই ফাঁকা
ছবি: প্রথম আলো

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়ে গিয়েছিল। এতে এই মহাসড়কের মানিকগঞ্জ অংশের নয়াডিঙ্গী, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, বানিয়াজুরী, মহাদেবপুর ও টেপড়া এলাকায় ধীরগতিতে যানবাহনগুলোকে চলাচল করে। আজ সকালে মহাসড়কের যাত্রী ও যানবাহন ছিল খুবই সীমিত।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘাটে নদী পারাপারে অপেক্ষমাণ পণ্যবাহী গাড়িও নেই বললেই চলে। আজ সকাল ১০টার দিকে পাটুরিয়ার ৩টি ঘাটে ৫টি এবং দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩টি ফেরি যানবাহনের অপেক্ষায় নোঙর করা ছিল। এ ছাড়া সাতটি ফেরি যাত্রী ও যানবাহন নিয়ে মাঝনদীতে ছিল।

আজ সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ একেবারেই নেই। দু-চারজন করে যাত্রী, দু-একটি দূরপাল্লার বাস এবং ব্যক্তিগত গাড়ি ঘাটে আসার পরপরই নদী পার হয়ে দৌলতদিয়া প্রান্তে চলে যাচ্ছে। আজ লঞ্চেও যাত্রী পারাপার হচ্ছে। তবে লঞ্চের পারাপারের যাত্রীও খুবই কম ছিল।

ঈদ উদ্‌যাপনের জন্য কুষ্টিয়ায় গ্রামের বাড়িতে যেতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সকাল ১০টায় পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছান শাহরিয়ার হোসেন। ঘাটে আসার পরপরই তিনি ফেরিতে উঠে পড়েন। তিনি বলেন, ‘আগে ঈদের আগের দিন ঘাটে প্রচণ্ড চাপ থাকত। তবে এবার উল্টো চিত্র। এত তাড়াতাড়ি ফেরি পাব, ঘাটে আসার আগে মনে হয়নি।’
বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকাল থেকে পাটুরিয়া ঘাট এলাকা অনেকটা ফাঁকা রয়েছে। যানবাহনের জন্য ফেরিকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

ঈদের এক দিন আগে আজ বুধবার মহাসড়কে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল না। আজ বুধবার সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

মহাসড়কের চিত্র
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যাত্রী ও যানবাহনের চাপ নেই বললেই চলে। স্বস্তি নিয়ে আজ যাত্রীরা গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (প্রশাসন) কে এম মেরাজ উদ্দিন বলেন, গতকাল সন্ধ্যার পর থেকেই ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কমে আসে। রাতে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। আজ বুধবার সকাল থেকে মহাসড়কে মানিকগঞ্জ অংশে খুবই কমসংখ্যক যানবাহন ও যাত্রী চলাচল করছে।