পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছে মানিক

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় মানিক রহমান
ছবি: সংগৃহীত

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই মানিক রহমানের। এক পা খাটো। কিন্তু তার এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতা লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারেনি। অদম্য মেধাবী এই শিক্ষার্থী চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেয়েছে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে মানিক রহমান। সব বিষয়ে ৮০-এর বেশি নম্বর পেয়েছে সে। তার এই ফলে মা-বাবাও খুশি।

মানিক রহমানের বাড়ি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামে। তাঁর বাবা ওষুধ ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ও মা প্রভাষক মরিয়ম বেগম। মানিক এই দম্পতির বড় ছেলে।

মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই মানিককে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছি। পিইসি (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী) ও জেএসসিতে (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) জিপিএ–৫ পেয়েছিল সে।’

এইচএসসিতে ভালো ফল করে মানিক বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। ভবিষ্যতে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে চায় সে।

সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, পা দিয়ে মুঠোফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার এবং কম্পিউটার টাইপ করতেও পারদর্শী সে।

ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও মানিক অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হলে বসে পরীক্ষা দিয়েছে। সে জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমরা গর্বিত। মানিক জীবনে অনেক বড় হোক, এই দোয়া করি।’

ফুলবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল হাই প্রথম আলোকে বলেন, ‘মানিক অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। আমরা তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি। আগামীকাল আমরা তাকে শুভেচ্ছা জানাতে তার বাসায় যাব। তার উচ্চশিক্ষার জন্য কোনো সহযোগিতা লাগলে আমরা পাশে থাকব।’