জাজিরায় ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি, অন্যথায় পদ্মা সেতু ব্লকেডের ঘোষণা

শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার মঙ্গলমাঝি–সাত্তার মাদবর বাজারেছবি: প্রথম আলো

পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ ও এর আশপাশে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়নের মঙ্গলমাঝি–সাত্তার মাদবর বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন।

সমাবেশে জাজিরায় ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদনের ঘোষণা দেওয়া না হলে পদ্মা সেতু ব্লকেড করার ঘোষণা দেন নেতারা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন, সাবেক অর্থ সম্পাদক (কোষাধক্ষ) মজিুবর রহমান, জামায়াতের জাজিরা উপজেলা আমির মাসুম বিল্লাহ, গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ মুন্সি, এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক আকরাম হোসেন প্রমুখ।

আরও পড়ুন

গত বছর নভেম্বর থেকে কয়েক দফায় ভাঙনে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধের এক কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের পাশে থাকা ৩৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৫৭টি বসতবাড়ি গত দুই মাসে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অন্তত ২৫০টি বসতঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের পাশের তিনটি গ্রামের ৬০০ পরিবার ও মঙ্গলমাঝি-সাত্তার মাদবর ঘাট ও বাজারের ২৪০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে পড়েছে।
গতকাল বিকেলে জাজিরার মঙ্গলমাঝি-সাত্তার মাদবর বাজারে সমাবেশে নদীভাঙনের শিকার ভুক্তভোগী লোকজন অংশ নেন। পরে সন্ধ্যার দিকে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করা হয়।

আরও পড়ুন

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ‘ভাঙনে শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছেন। ভাঙন রোধে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে না। গত দেড় মাসে ১ লাখ ৩০ হাজার বালুভর্তি জিওব্যগ ফেলার দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ তথ্য আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা এর স্বচ্ছ হিসাব দাবি করছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পদক্ষেপ না নিলে পদ্মা সেতু ব্লকেড করে দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব পানি উন্নয়ন বোর্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দিলে দ্রুততম সময়ে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। দুই মাস ধরে ভাঙন ঠেকানোর জন্য বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। জিওব্যাগ ফেলার হিসাব স্বচ্ছতার সঙ্গে রাখা হচ্ছে।