বাউফলে ৭ ডাকাত গ্রেপ্তার, নেতৃত্ব দেওয়া আমিনুল ছাত্রলীগ কর্মী

আমিনুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফলে একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় আন্তবিভাগ ডাকাত দলের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে আমিনুল ইসলাম নামে ছাত্রলীগের এক কর্মী ডাকাতির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। সম্প্রতি বাউফলে দুটি ডাকাতিতে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তাঁরা পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বাউফল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মনিরুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ৭ জনই ১৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে উপজেলার দাসপাড়া গ্রামে বন বিভাগের সাবেক এক আইন কর্মকর্তার বাসভবনে ডাকাতি করেন। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা আরও একটি ডাকাতির কথা আদালতে স্বীকার করেছেন। ওই মামলায়ও তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

গ্রেপ্তার ওই ডাকাতেরা হলেন বাউফল উপজেলার কালাইয়া গ্রামের মো. ইকবাল মৃধার ছেলে আমিনুল ইসলাম, কনকদিয়া গ্রামের মো. ফারুক মোল্লার ছেলে উজ্জ্বল হোসেন ওরফে সাহেদ (৩০), কালাইয়া গ্রামের আবদুল মান্নান মাতুব্বরের ছেলে জুলহাস মাতুব্বর (৩৫), আয়নাবাজ কালাইয়া গ্রামের আলম সরদারের ছেলে বাচ্চু সরদার (৪৫), পূর্ব খাজুরবাড়িয়া গ্রামের আবদুল মতলেব আকনের ছেলে সুমন আকন (৩৫), ঝালকাঠীর নলছিটি উপজেলার পাওতা গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে সোলায়মান হোসেন ওরফে রনি (২৫) ও পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার চরগাজীপুর গ্রামের আনিচ শেখের ছেলে নজরুল শেখ (৪২)।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি বাউফলে একাধিক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে। প্রথমে উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের সুমন আকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের মাধ্যমে পুলিশ জানতে পারে, সংঘবদ্ধ একটি দল ডাকাতি করতে ঢাকা থেকে বাউফলে আসছে। পরে ফরিদপুরের রাজৈর এলাকায় হানিফ পরিবহন থেকে বাচ্চু, উজ্জ্বল, জুলহাস ও নজরুলকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাউফলে ডাকাত দলের সরদার আমিনুলসহ অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়। আমিনুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি রামদা, দুটি শাবল, একটি কাটারসহ বিভিন্ন দেশি অস্ত্র জব্দ করে পুলিশ।

পুলিশ ও দলীয় সূত্র জানায়, ডাকাত দলের সাত সদস্যের মধ্যে আমিনুল বাউফলে ডাকাতির নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ ও তাঁর ছেলে রায়হান সাকিবসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের অনেক ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে অপমান করতে এসব করা হচ্ছে। আমাকে অপমান করলে বাউফলের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষকে অপমান করা হয়। আমি এসব নিয়ে বিব্রত নই।’

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ টি এম আরিচুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘তারা সবাই পেশাদার ডাকাত।’ আমিনুলের বিষয়ে বলেন, তিনি ছাত্রলীগের কর্মী। এ জন্য আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতা তাঁকে গ্রেপ্তারে অসন্তষ্ট হয়েছেন। তবে তিনি ওই নেতার নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।