ফরিদপুরে কর্মসূচি সফল করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকে টাকা দিয়েছেন নিক্সন, দাবি পুলিশের

আওয়ামী লীগের ফরিদপুর জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবারছবি: প্রথম আলো

ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি সফল করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক হোসেনকে পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছেন—এমন দাবি করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আব্দুল জলিল।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয় জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার বলেন, ২০২১ সাল থেকে ফারুক হোসেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চব্বিশের ৫ আগস্টের পর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের অনুপস্থিতিতে দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরী ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি সফল করার জন্য ফারুককে পাঁচ লাখ টাকা দেন। এর মধ্যে চার লাখ টাকা তিনি ইতিমধ্যে একজন ব্যক্তিকে দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সময়ে দলীয় কর্মসূচির জন্য বিকাশে দলের নেতা-কর্মীদের অর্থ পাঠিয়েছেন। ফারুক যে ব্যক্তিকে চার লাখ টাকা দিয়েছেন, তাঁদের নাম পুলিশ জেনেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আগামী ১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি সফল করা এবং সারা দেশে অচলাবস্থা তৈরির উদ্দেশ্যে ৯ নভেম্বর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ফরিদপুর শহরের ব্রাহ্মসমাজ সড়কে আওয়ামী যুব মহিলা লীগ ও আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা একত্র হন। তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক স্লোগান, অরাজকতা, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করেন। এ ষড়যন্ত্রের মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থের জোগানদাতা হলেন ফারুক হোসেন।

এ ঘটনার পর সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ শহরের ঝিলটুলী মহল্লার নূরজাহান টাওয়ারের ১০ তলায় অভিযান চালিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুবলীগের সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক হোসেন (৫৩) ও জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাসরিন আক্তারকে (২৮) গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ সুপার বলেন, ফারুক হোসেনের মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তিনি ঢাকা লকডাউন কর্মসূচি সফল করতে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীর সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ছয়টি মামলা রয়েছে—এর মধ্যে চারটি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় ও দুটি ঢাকায়।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল্লাহ বিশ্বাস বলেন, উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান বাদী হয়ে ফারুক হোসেন ও নাসরিন আক্তারকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা করেছেন। আজ দুপুরে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয় এবং ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।