প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

ফাঁসি
প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আব্বাস উদ্দীন এ রায় দেন। এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

জয়পুরহাট আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন রেজাউল করিম (৫৮)। তিনি ক্ষেতলালের হাঁপানিয়া নয়াপাড়া গ্রামের ইব্রাহিম আলী প্রামাণিকের ছেলে। একই সঙ্গে তাঁকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার ১৫–১৬ বছর আগে রেজাউলের সঙ্গে আঙ্গুরী বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। আঙ্গুরী বিয়ের কিছুদিন পর তাঁর বাবার বাড়িতে চলে আসেন। দুই বছর পর আবারও আঙ্গুরী তাঁর স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন। এতে আঙ্গুরীর সঙ্গে তাঁর বাবার কেউ যোগাযোগ রাখেননি। আঙ্গুরী স্বামীর ঘর-সংসার করছিলেন। আঙ্গুরী দুই ছেলে ও তিন মেয়েসন্তান জম্ম দেন। রেজাউলের স্বভাব-চরিত্র ভালো ছিল না। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে দুটি হত্যা মামলা হয়। তিনি পুলিশের ভয়ে প্রায় বাড়ি ছেড়ে গা ঢাকা দিতে থাকতেন। রেজাউল মাঝেমধ্যে বাড়ি এসে তাঁর প্রতিপক্ষ ইসমাইল হোসেনকে শায়েস্তা করার জন্য হুমকি দিতেন।

২০০৫ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রেজাউল প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে স্ত্রী আঙ্গুরীকে গলা কেটে ও ছয় বছরের সন্তান হিটলারকে পেটে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। এরপর তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরদিন সকাল রেজাউলের ১০ বছরের ছেলে রফিকুল ইসলাম তার মামা মোজাহার আলীর বাড়িতে গিয়ে মায়ের গুরুতর অসুস্থতার খবর দেন। ওই দিন সকালে মোজাহার তাঁর বোনের বাড়িতে এসে শয়নঘরে বোন আঙ্গুরীর লাশ ও বাড়ির পাশে মসজিদের পাশে দেয়ালে ভাগিনা হিটলারের নাড়িভুঁরি বের হওয়া লাশ পড়ে থাকা দেখেন।

ওই দিনই বোন ও ভাগিনাকে হত্যার ঘটনায় মোজাহার আলী বাদী হয়ে থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ২০০৫ সালের ৯ আগস্ট তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। দীর্ঘ শুনানির পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলায় রায় ঘোষণা করা হয়।

জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায়ে রেজাউলকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ খুশি।