লালমোহনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ছাত্রলীগের কেউ জড়িত নন

ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলন করে জেলা ছাত্রলীগের নেতারা
ছবি: প্রথম আলো

ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়ন (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শরীফুল ইসলামের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের যে ঘটনা ঘটেছে, এর সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই জড়িত নন বলে দাবি করেছে জেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা। নেতারা বলেন, ঘটনার দুদিন আগেই শরীফুল ঢাকায় চলে যান। বিএনপি তাঁদের সংগঠনের সম্মান ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করে নেতারা এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়হান আহমেদ। সেখানে ভোলা জেলা, সদর ও লালমোহন উপজেলা ছাত্রলীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত সোমবার রাতে ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের জনতাবাজার এলাকার এক বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে একজন মারা যান। নিহত ব্যক্তির নাম মনির বয়াতি। বিস্ফোরণে আহত মো. ফিরোজকে (৩৫) ঢাকার একটি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরদিন গণমাধ্যমে বিষয়টি প্রচার হলে তাঁরা জানতে পারেন, বাড়িটি  ধলীগৌরনগর ইউনিয়ন (দক্ষিণ) ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামের। তখন নেতারা দ্রুত ঘটনাটি তদন্ত করতে সেখানে যান।

নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারেন, শরিফুল ইসলাম গত রোববার বিকেলে লালমোহন উপজেলার নাজিরপুর লঞ্চঘাট দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিনি সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে ছিলেন। সেখানে তিনি অন্যদের সঙ্গে ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান।

জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আরও বলেন, গত সোমবার রাতের বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা দুঃখজনক। তাঁদের ধারণা, ওই বোমা বা ককটেল বাইরে থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছে। ছাত্রলীগ আইন ও প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাঁদের বিশ্বাস, প্রশাসন অতি দ্রুত এই ঘটনার সঙ্গে আসলে কারা জড়িত, তা খুঁজে বের করবে। বিএনপি বারবার আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করতে চক্রান্ত করছে।

তবে এ সংবাদ সম্মেলনে শরীফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন না। ঘটনার পর থেকে তিনি এলাকায় আসেননি। এ বিষয়ে রায়হান আহমেদ বলেন, শরীফুল ঢাকায় আছেন। এ বিষয়ে শরীফুলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

ছাত্রলীগের সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো. রাইসুল আলম বলেন, সত্য কখনো চাপা থাকে না। ওই এলাকার সবাই জানে, বোমা কারিগর বোমা বানাতে গিয়ে বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। অথচ বিএনপি নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা-মামলার ভয়ে এলাকাছাড়া। তা ছাড়া ওই ছাত্রলীগ নেতার বাবা নিজেই সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে বলেছেন, বোমা বিস্ফোরণে তাঁর ছেলে শরীফুলের ঘরের চাল ও বেড়া উড়ে গেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জাব্বারুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে নিহত মনির বয়াতির ছেলে বেল্লাল হোসেন বাদী হয়ে লালমোহন থানায় মামলা করেন। অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় কেউ আটক হননি। তবে বোমা বানানোর সরঞ্জাম জব্দ হয়েছে।

এসআই আরও বলেন, এজাহারে বেল্লাল লিখেছেন, তাঁর বাবা ওই রাতে আজাহার মাঝির বাড়িতে ছাত্রলীগ নেতা শরীফুলের বড় ভাই জাহাঙ্গীর মাঝির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। তখন ওই বাড়িতে কে বা কারা বোমা হামলা করে। এর সঙ্গে যাঁরা সম্পৃক্ত, তাঁদের যদি ধরতে পারেন, তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার জানা যাবে। পুলিশের তদন্ত চলছে।