পুলিশের ‘ব্রিফিং প্যারেড’ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম
ছবি: প্রথম আলো

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে প্রার্থীদের এজেন্টদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। কাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনের প্রস্তুতি উপলক্ষে আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে গাজীপুরের শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে আয়োজিত পুলিশের ‘ব্রিফিং প্যারেড’ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

নির্বাচন উপলক্ষে পুরো গাজীপুরকে নিরাপত্তার বলয়ে ঢেকে ফেলা হয়েছে উল্লেখ করে ফরিদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনসহ সবার একটাই চাওয়া, যেকোনো মূল্যে গাজীপুরে একটি মডেল নির্বাচন উপহার দেওয়া। এই লক্ষ্যে প্রায় ৫ স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরো নগরকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সব দিক থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সব কেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্টের অবস্থান নিশ্চিতের বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘ভোটের দিন প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেওয়া নিয়ে আপনারা (সাংবাদিক) যে আশঙ্কা করছেন, সে বিষয়ে আমাদের সবার নজর আছে। ভোট চলাকালে যদি এমন কোনো বিষয় আমাদের নজরে আসে বা কেউ অভিযোগ করে, তবে তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে প্রতিটি কেন্দ্রে প্রার্থীর এজেন্টের অবস্থান নিশ্চিত করব। আইনে ভেতরে থেকে প্রার্থীদের যে সুবিধা পাওয়ার কথা, তা পাবেন।’

ব্রিফিং প্যারেড অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানসহ বিজিবি ও আনসার বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ ও আনসার বাহিনীর প্রায় ৯ হাজার সদস্য।

ভোট চলাকালে যেকোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ সদস্যদের তৎপর থাকার আহ্বান জানিয়ে মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘গাজীপুরসহ পুরো বিশ্বের লোকজন তাকিয়ে আছে আমাদের এই নির্বাচনের দিকে। আমরা যেকোনো মূল্যে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই। আমরা আজ রাতেই পুরোদমে মাঠে থাকব। বিভিন্ন এলাকা ঘুরব, দেখব সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। পাশাপাশি আপনাদেরও সব সময় সব দিক থেকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। কোথাও কোনো অসংগতি পেলে কেন্দ্রে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বা অন্য বাহিনীর যাঁরা আছেন, তাঁদের সবার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে।’

জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্যে প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে আনসারসহ প্রায় ১৬ জন সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। আর একটু গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন করে থাকবেন। এ ছাড়া কেন্দ্রের বাইরে সব সময় পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স, মোবাইল ফোর্স, রিজার্ভ ফোর্স, বিজিবিসহ ৫৭টি ওয়ার্ডে ৫৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চলমান থাকবেন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কাল সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হবে। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ, ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন হিজড়া। এই সিটিতে ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড আছে। মোট ভোটকেন্দ্র ৪৮০টি। আর ভোটকক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি।