এসএসসি পরীক্ষায় অসদুপায়, শিক্ষার্থী বহিষ্কার, শিক্ষকের কারাদণ্ড
শিক্ষকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুঠোফোন পকেটে নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢুকেছিল এসএসসির এক পরীক্ষার্থী। প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে কৌশলে সেটির ছবিও তোলে সে। এরপর সেটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে চালান করে দেয়। মুহূর্তেই সেই গ্রুপে আসতে থাকে প্রশ্নের সমাধান। খাতায় লিখতে থাকে পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা শুরুর দেড় ঘণ্টার মাথায় মুঠোফোনসহ ধরা পড়ে যায় ট্যাগ অফিসারের কাছে। বহিষ্কার করা হয় ওই পরীক্ষার্থীকে। এ কাজে সহযোগিতা করার দায়ে এক শিক্ষককে সাত দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ রোববার সকালে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এদিন ছিল মাধ্যমিকের উচ্চতর গণিত বিষয়ের পরীক্ষা। পরীক্ষায় এমন অসদুপায় অবলম্বন করায় ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকায় এক শিক্ষককে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাত দিনের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেহা তুজ জোহরা। প্রথম আলোকে তিনি জানান, পরীক্ষার হলে মুঠোফোন নিয়ে আসার অপরাধে এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ওই ফোন ঘেঁটে ৫০ জনের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ পাওয়া যায়। যেখানে আজ অনুষ্ঠিত উচ্চতর গণিত বিষয়ের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্রের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে পুলিশের সহায়তা নিয়ে উত্তরপত্র সরবরাহকারীকে শনাক্ত করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই শিক্ষক তাঁর অপরাধ স্বীকার করেছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করে ওই শিক্ষককে সাত দিনের জেলহাজত ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও উত্তরপত্র সরবরাহের কাজে আরও কেউ জড়িত আছেন কি না, এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম আনোয়ার হোসেন। তিনি চিরিরবন্দর উপজেলার আমেনা বাকি রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের গণিতের শিক্ষক। আর বহিষ্কার হওয়া ওই পরীক্ষার্থী উপজেলার এ জেড রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষার্থী। একই দিনে ওই পরীক্ষাকেন্দ্রে অসদুপায় অবলম্বন করায় আরও এক পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
চিরিরবন্দর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব সুভাষ চন্দ্র রায় বলেন, ওই শিক্ষার্থী একাডেমিক ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০৩ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিল। সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। প্রশ্নপত্র দেওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পর ওই পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে মুঠোফোনটি জব্দ করা হয়েছে। পরে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গত ১০ এপ্রিল মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়। আজ ছিল উচ্চতর গণিত বিষয়ের পরীক্ষা।