দেশে সেচপাম্পের ৭০ শতাংশই তৈরি হয় বগুড়ায়

বগুড়া জেলার মানচিত্র

কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচপাম্পের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশই দেশে তৈরি হয়। আর দেশীয় সেচপাম্পের ৭০ শতাংশই তৈরি হয় বগুড়ার ফাউন্ড্রি ও হালকা প্রকৌশল কারখানায়। থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচপাম্পের ইম্পেলার তৈরির মাধ্যমে বেশি পানি উত্তোলন ছাড়াও সেচকাজে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয় করে বছরে ৪৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।

আজ শনিবার বগুড়ার ফাউন্ড্রি ও কৃষি যন্ত্রপাতি তৈরি শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্প উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন আলোচকেরা।

‘থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইম্পেলার তৈরির মাধ্যমে কৃষিকাজে ব্যবহৃত সেচপাম্পের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক দিনব্যাপী এই কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক)।

ইম্পেলার তৈরির এ প্রযুক্তি দেশীয় পাম্প তৈরি শিল্পপ্রতিষ্ঠান মালিকদের কাছে হস্তান্তরের লক্ষ্যে বিটাক বগুড়া কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এই কর্মশালায় বগুড়ার ফাউন্ড্রি ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন কারখানা মালিকেরা অংশ নেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিটাকের মহাপরিচালক পরিমল সিংহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফাউন্ড্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুল মালেক আকন্দ এবং অ্যাগ্রিকালচারাল মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল মিয়া। সভাপতিত্ব করেন বিটাকের পরিচালক প্রকৌশলী মো. মুহসিন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ।

বক্তারা বলেন, থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তির মাধ্যমে ইম্পেলার তৈরির কৌশল ফাউন্ড্রি শিল্প খাতে ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে কৃষকেরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি ফাউন্ড্রি শিল্পেরও উন্নতি হবে। এর মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত হবে।

প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ইম্পেলার তৈরি করলে অধিক পানি উত্তোলন নিশ্চিত হবে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফাউন্ড্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুল মালেক আকন্দ বলেন, বিটাক উদ্ভাবিত থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইম্পেলার তৈরির এ উদ্যোগ নিয়ে সেচপাম্প উৎপাদনকারী কারখানামালিকদের মাঝে আগ্রহ তৈরি করেছে। বিটাকের সহযোগিতায় এ প্রযুক্তি ফাউন্ড্রি ও কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজে লাগানো সম্ভব হলে কৃষক লাভবান হবেন।

বিটাকের মহাপরিচালক পরিমল সিংহ বলেন, বিটাকের বহুমুখী কাজের মধ্যে একটি হলো নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের মধ্যে তা পৌঁছে দেওয়া। বিটাক নিরলসভাবে এ কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রযুক্তি সফলভাবে ছড়িয়ে দিতে পারলে কৃষক প্রত্যক্ষভাবে উপকৃত হবেন, কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হবে।