যশোরে প্রসূতির কোলজুড়ে একসঙ্গে চার সন্তান
যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া গ্রামের শারমিন আকতার ও কুদ্দুস মোল্লা দম্পতির ১০ বছরের সংসার জীবন। এত দিন তাঁদের কোনো সন্তান হচ্ছিল না। একটি সন্তানের আশায় তাঁরা নানা চেষ্টা করেছেন। অবশেষে একটি-দুটি নয়, চার–চারটি সন্তান এসেছে তাঁদের কোলজুড়ে।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে যশোর শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এই চার নবজাতক জন্ম নিয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, একটি কেবিনে রেখে মা ও নবজাতকদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। চার নবজাতকের মধ্যে একটির ওজন কম হওয়ায় অন্য একটি বেসরকারি হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (এনআইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে অপর তিনটি সন্তান সুস্থ রয়েছে। স্যালাইনের মাধ্যমে তাদের খাবার সরবরাহসহ অন্যান্য চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রসূতি শারমিন আকতারের অস্ত্রোপচার করেছেন যশোর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের কনসালট্যান্ট প্রতিভা ঘরাই। তিনি বলেন, ‘চারটি নবজাতকই সুস্থ আছে। একটি নবজাতকের ওজন এক কেজি এবং অপর তিনটির ওজন হয়েছে দুই কেজি করে। ওজন কম হওয়ায় ওই একটি নবজাতককে আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। ওই শিশুটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আমরা আশাবাদী। অন্য তিনটি নবজাতকসহ তাদের মা সুস্থ আছেন।’
একই সঙ্গে দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে পেয়ে আমাদের দুই পরিবারে এখন ঈদের মতো আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তবে চার সন্তানকে মানুষ করা অনেক খরচের বিষয়। টাকার অভাবে মানুষকে মিষ্টিমুখ পর্যন্ত করাতে পারছি না। এদিকে তাদের বাবা দেশে গিয়ে এখনো কোনো কাজ পাননি। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
দম্পতির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৬ জুলাই যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার সঙ্গে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার সুতারকান্দি বাজিতপুর গ্রামের শারমিন আকতারের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে একটি সন্তানের জন্য তাঁরা ঢাকা, যশোর ও মাদারীপুরের বিভিন্ন চিকিৎসক-কবিরাজের দ্বারস্থ হয়েছেন।
কুদ্দুস মোল্লা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। স্ত্রীকে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় রেখে মাস চারেক আগে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। কিন্তু সেখানে এখনো কোনো কাজ পাননি তিনি।
শারমিন আকতার বলেন, ‘বিয়ের ১০ বছরে কোনো সন্তান না হওয়ায় আমাদের মনে অনেক কষ্ট ছিল। এখন একই সঙ্গে দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে পেয়ে আমাদের দুই পরিবারে এখন ঈদের মতো আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। তবে চার সন্তানকে মানুষ করা অনেক খরচের বিষয়। টাকার অভাবে মানুষকে মিষ্টিমুখ পর্যন্ত করাতে পারছি না। এদিকে তাদের বাবা দেশে গিয়ে এখনো কোনো কাজ পাননি। সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’