চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেওয়া প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেছে পরিবার। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই নারাজি আবেদন করেন মামলার বাদী ও নিহত ছাত্রীর বাবা মো. আমিন। আদালত নারাজি আবেদনের ওপর শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য রেখেছেন।
গত ৩০ জানুয়ারি সিআইডি নগরের পতেঙ্গা থানার তাসফিয়া হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় আদালতে। এতে বলা হয়, পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও এই হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল। সেগুলোতেও বলা হয়েছিল একই কথা।
স্কুলছাত্রীর মা নাঈমা খানম প্রথম আলোকে বলেন, তাসফিয়ার শরীরে নির্যাতনের ব্যাখ্যা তদন্তে উঠে আসেনি। সবাই বলছে পানিতে ডুবে মারা গেছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে রয়েছে, শরীরে ১১টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুই চোখ মারাত্মকভাবে থেঁতলানো। ডান চোখের ভ্রু ক্ষতবিক্ষত। মৃত্যুর আগে নাক দিয়ে বের হয়েছে ফেনা। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আদালতে নারাজি আবেদন করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ১ মে নগরের গোলপাহাড় মোড় থেকে অটোরিকশায় চড়ে বাসায় যাওয়ার কথা থাকলেও পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় চলে যায় নগরের একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসফিয়া আমিন। পরদিন সৈকতে তার মরদেহ পায় পুলিশ। তাসফিয়া কোন অটোরিকশায় চড়ে পতেঙ্গায় পৌঁছেছিল, সেই গাড়ির হদিস পায়নি পুলিশ।
ঘটনার পর তাসফিয়ার বাবা মো. আমিন বাদী হয়ে নগরের পতেঙ্গা থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিরা হলেন মেয়ের বন্ধু আদনান মির্জা, মো. সোহাইল, শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম ও মো. ফিরোজ। এদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানের সবাই জামিনে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার দিন কাউকে না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায় তাসফিয়া আমিন। বন্ধু আদনান মির্জার সঙ্গে গোলপাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল নামের একটি রেস্টুরেন্টে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩৭ মিনিটে বের হয়ে একা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠে তাসফিয়া। এর পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে জিইসি মোড়ের ২০ কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা নেভালে কর্ণফুলী নদীর তীরে তার লাশ পাওয়া যায়।