মাদারীপুরে যুবককে কুপিয়ে জখম, কবজি বিচ্ছিন্ন

হুমায়ুন মাতুব্বরের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। রোববার রাতে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালেছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরে পূর্বশত্রুতার জের ধরে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এতে তাঁর ডান হাতের কবজি শরীর থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ওই যুবকের নাম হুমায়ুন মাতুব্বর (৩০)। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ এলাকার রহমান মাতুব্বরের ছেলে। তিনি রাজমিস্ত্রির কাজ করেন।

হুমায়ুনের বড় ভাই মো. সুমন মাতুব্বর বলেন, গত শুক্রবার ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন হুমায়ুন। গতকাল সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়ির কিছুটা দূরে একটি সেতুতে বসে ছিলেন তিনি। তখন একই গ্রামের প্রয়াত লতিফ ব্যাপারীর ভাগনে জাহাঙ্গীর, আলমগীর, জসিমসহ আরও কয়েকজন মিলে হুমায়ুনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। কুপিয়ে তাঁর ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এটি কোনো রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, পূর্বশত্রুতার জের ধরেই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন তাঁরা। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান তিনি।

স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ৮টার দিকে বাড়ির পাশের একটি সেতুতে বসে ছিলেন হুমায়ুন মাতুব্বর। একই এলাকার আল আমিন হাওলাদার ও তাঁর বাবা আলমগীর হাওলাদার লোকজন নিয়ে হুমায়ুনের ওপর অতর্কিতে হামলা চালান। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এতে তাঁর ডান হাতের কবজি শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হুমায়ুনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা দ্রুত পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন হুমায়ুনকে উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নেন। অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে হুমায়ুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা আবু সফর হাওলাদার বলেন, হুমায়ুনের শরীরের বিভিন্ন অংশ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম হয়েছে। তাঁর ডান হাতের কবজি শরীর থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হওয়ায় অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে পড়েছে। বিচ্ছিন্ন হওয়া হাতের অংশটি একটি ব্যাগে করে রোগীর সঙ্গে আনা হয়। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলমগীর হাওলাদার বলেন, ‘আমি বা আমার ছেলে আল আমিন, কেউ কোনো হামলায় জড়িত ছিলাম না। আমাদের নামে হুমায়ুনের ভাই সুমন মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন।’

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এইচ এম সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এটি কোনো নির্বাচনী সহিংসতা নয়, পূর্বশত্রুতার জের ধরে হুমায়ুনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহত হুমায়ুন ও অভিযুক্ত আলমগীর হাওলাদারের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা আছে। এ কারণে হুমায়ুন এলাকায় থাকতেন না। এলাকায় আসার পরই তাঁকে একা পেয়ে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।