কুমিল্লায় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তি

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার গজারিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিন
ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় এক মাদ্রাসাছাত্রীকে (১০) ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার মো. জসিম উদ্দিন (২২) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমিল্লার ৭ নম্বর আমলি আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারকি হাকিম মিথিলা জাহান তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে জসিম ওই ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির পর হত্যা করেছেন বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

জসিমের বাড়ি বরুড়া উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে। পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীর লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি জসিমকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে বরুড়া থানায় মামলা করলে জসিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

আদালতে দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ওই মাদ্রাসাছাত্রীকে চিপস খাওয়ানোর কথা বলে জসিম বাঁশঝাড়ের দিকে নিয়ে যান। এরপর প্রথমে তাঁকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ওই ছাত্রী ঘটনাটি সবাইকে বলে দেবে জানালে জসিম ওড়না দিয়ে মুখ চেপে তাকে হত্যা করেন। ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, সেটা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা যাচ্ছে না। জসিম শ্লীলতাহানির কথা স্বীকার করেছেন।

ইকবাল বাহার আরও বলেন, আজ ময়নাতদন্ত শেষে ওই ছাত্রীর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যায় গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা যাবে।

বরুড়ার ভাউকসার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সফিকুর রহমান জানান, গতকাল সন্ধ্যায় ওই ছাত্রীর মামাতো ভাই মুঠোফোনে তাঁকে জানান, তাঁর ফুফাতো বোনকে তাঁরা খুঁজে পাচ্ছেন না। তবে এলাকাবাসী জসিমের সঙ্গে তাকে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকার লোকজন জসিমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সামনে জসিমকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি নীরব হয়ে যান। পরে তাঁকে ইউনিয়ন পরিষদে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ওই ছাত্রীর লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি জসিমকে থানায় নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।’

ভাউকসার ইউপির চেয়ারম্যান সৈয়দ মাশরুর হক বলেন, ঘটনাটি শুনেছেন। ধর্ষণের পর মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকাবাসী বলছেন। বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নন। তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানান তিনি।