বাসা থেকে স্কুলছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার, যুবক আটক

তাসমিয়া হোসেনের গলাকাটা লাশ উদ্ধারের পর তার মায়ের আহাজারি। বৃহস্পতিবার রাতে নোয়াখালী শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নোয়াখালী শহরে নিজ বাসা থেকে এক স্কুলছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাসাটি শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যের ভিত্তিতে সুধারাম থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। তবে কে বা কারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রতিবেশী এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
নিহত ছাত্রীর নাম তাসমিয়া হোসেন ওরফে অদিতি (১৪)। সে নোয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার বাবার নাম মৃত রিয়াজ হোসেন। মা রাজিয়া সুলতানা বেগমগঞ্জের একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

তাসমিয়ার চাচা ইমাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বড় ভাইয়ের পরিবার বাড়ির তিনতলা ভবনের নিচতলার একটি ইউনিটে থাকে। ২০১২ সালে সালে তাঁর ভাই মারা যান। ভাবি বেগমগঞ্জের জয়নাল আবদিন মেমোরিয়াল একাডেমিতে চাকরি করেন। সকালে তিনি মেয়েকে বাসায় রেখে কর্মস্থলে যান। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখেন দরজার বাইরে তালা ঝোলানো। সঙ্গে থাকা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরের জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান। মেয়েকে খুঁজতে গিয়ে দেখেন ভেতরে কক্ষের দরজায় অটোলক করা। পরে দরজা ভেঙে মেয়েকে গলাকাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিলে আশপাশের সবাই এগিয়ে আসেন।

ইমাম উদ্দিন জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। যাওয়ার সময় তাসমিয়াকে বাসার ফটকে দাঁড়ানো দেখেন। এটাই শেষ দেখা। ভাতিজির লাশ দেখে তাকে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ধর্ষণের পর হত্যা করেছে বলে সন্দেহ করছেন তিনি। তাঁর ধারণা, দুর্বৃত্তরা মৃত্যু নিশ্চিত করে কৌশলে দরজার অটোলক লাগিয়ে গেছে এবং বাইরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে গেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন ইমাম উদ্দিন।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম স্কুলছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধারের ঘটনা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম বলেন, ওই স্কুলছাত্রীকে প্রতিবেশী নয়নের ছেলে মো. সাঈদ (২০) প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন এবং বিভিন্ন সময় হুমকি দিতেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়েছে। তবে সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, হত্যাকারী একা বা দলবলসহ পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে ভিকটিমকে একা পেয়ে ঘরে ঢুকে ধর্ষণসহ খুন করে মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে থানা-পুলিশ, ডিবি, পিবিআই, সিআইডি যৌথভাবে কাজ করছে। তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে সাঈদকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।