আতঙ্কে-ভয়ে আ.লীগ ক্ষমতা ছাড়তে চাচ্ছে না: মঈন খান

গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা আবদুল মঈন খান। বুধবার রাজশাহী নগরের ভুবন মোহন পার্কে
ছবি: শহীদুল ইসলাম

আওয়ামী লীগ ভয়ে-আতঙ্কে ক্ষমতা ছাড়তে চাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের কাছে গিয়ে মায়াকান্না করে বলেছে যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়লে তাদের ১০ লাখ নেতা-কর্মীকে বিএনপি মেরে ফেলবে। তবে বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ কথা বলেন তিনি।

আজ বুধবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরের ভুবন মোহন পার্কে চলে এই কর্মসূচি। এতে আবদুল মঈন খান প্রধান অতিথি ছিলেন। রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলীর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান, বিএনপির নেত্রী আসিফা আশরাফি পাপিয়া প্রমুখ।

আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে নীতি-আদর্শ সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এটি ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ। তাই তারা কোনো অবস্থাতেই ক্ষমতা ছাড়বে না। আওয়ামী লীগের কয়েক মাসের যে বক্তৃতা, তারা বলছে, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতেই হবে। আওয়ামী লীগকে কোনো অবস্থাতেই ক্ষমতাছাড়া যাবে না। আওয়ামী লীগ বিদেশিদের কাছে গিয়ে মায়াকান্না করে বলেছে, তারা ক্ষমতা ছাড়তে পারবে না। তারা ক্ষমতা ছাড়লে বিএনপি নাকি ১০ লাখ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে মেরে ফেলবে। তাহলে আওয়ামী লীগ কি এতই খারাপ করেছে, এটা কি রাষ্ট্রদূতেরা জিজ্ঞাসা করেননি। আওয়ামী লীগ খুব ভয়ে আছে। এর জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী।

আওয়ামী লীগের কোনো উসকানিতে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, সরকার বারবার বলেছে, বিএনপি যদি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে, তাহলে তাদের রক্ষা নেই। ১০টি বিভাগীয় গণসমাবেশের একটিতেও কী শৃঙ্খলাভঙ্গ হয়েছে, হয়নি। তাহলে আওয়ামী লীগ কেন শৃঙ্খলার কথা বলছে? এটা হচ্ছে উসকানিমূলক কথা। বিএনপির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের উসকানিতে উত্তেজিত হবেন না। মানুষ কখন উসকানি দেয়, মানুষ যখন নিজে ভয় পায়, দুর্বল হয়ে পড়ে তখন উসকানি দেয়। আওয়ামী লীগের আচার-আচরণে ইতিমধ্যে প্রমাণ হয়ে গেছে, আওয়ামী লীগ ভয় পেয়ে গেছে। বিএনপিকে নয়, এ দেশের জনগণকে ভয় পেয়েছে। ভয় পেয়ে তারা আবোল-তাবোল বকছে।

গণ-অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা–কর্মীরা। বুধবার রাজশাহী নগরের ভুবন মোহন পার্কে
ছবি: প্রথম আলো

জনগণই ক্ষমতার উৎস জানিয়ে মঈন খান বলেন, জনগণ ভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলকে সংসদে পাঠায়। এর অর্থ এটা নয় যে জনগণ তাদের ক্ষমতা রাজনৈতিক দলকে দিয়ে দিয়েছে। জনগণ প্রতিনিধিত্ব দিয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। এ সময় শেষে ক্ষমতা বারবার জনগণের কাছে ফিরে আসে। সেটা পরবর্তী ভোটের মাধ্যমে আবার প্রয়োগ করে। এটা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না নিলেও বুঝতে পারে। তাই তারা ভোটের অধিকার চায়।

১৬ জানুয়ারি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির নেতা মঈন খান

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বলেন, তাঁরা আইয়ুব খান ও এরশাদের মতো স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের একটাই দাবি, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।

বিএনপির নেত্রী আসিফা আশরাফি বলেন, ‘বাংলাদেশে আর কোনো কবিতা চলবে না। এখন চলবে আমি সেই দিন হব শান্ত, যেদিন বাংলাদেশের আকাশে-বাতাসে আওয়ামী লীগ থাকবে না।’

রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ বলেন, আওয়ামী লীগের কোনো নেতা, কোনো পুলিশ যদি তাঁর সামনে দাঁড়ায়, তার উপযুক্ত জবাব তিনি দেবেন। ২০১৪ সালে বাঘা-চারঘাটে একটি ভোটও পড়তে দেননি তাঁরা। এই সরকার যদি কোনো নির্বাচনের পাঁয়তারা করতে চায়, রাজশাহী জেলার মাটিতে কোনো নির্বাচন তাঁরা করতে দেবেন না।
বগুড়া-৪ আসনের পদত্যাগ করা বিএনপির সংসদ সদস্য মো. মোশারফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে প্রত্যেক নেতার লক্ষ্য থাকে এমপি হওয়ার। এমপি হওয়ার পর মন্ত্রী হওয়ার। কিন্তু তাঁরা এমপি হওয়ার পর পদত্যাগ করেছেন। এ সরকারের অধীনে বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।