বগুড়ায় বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) দ্বিতীয় শীর্য নেতা ফাঁসি হওয়া সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইয়ের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার ভোরে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার চকসদু বাজার এলাকার একটি বাড়িতে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. ওয়ালি উল্লাহ (৪৭)। তিনি গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের কর্নিপাড়া গ্রামের মৃত কলিমউদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোরে ওয়ালি উল্লাহকে গাবতলী উপজেলার চকসদু বাজারের গাইবান্ধা হোটেলের সামনে মো. ওমর আলীর নবনির্মিত বাড়িতে গোপন বৈঠক থেকে গ্রেপ্তার করে গাবতলী মডেল থানার পুলিশ। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাবতলী উপজেলার জেএমবি সদস্য আহসান হাবিবসহ ছয়-সাতজন পালিয়ে যান। পরে গোলাবাড়ী মাছবাজারের পূর্ব পার্শ্বে মাড়িয়া এলাকায় ওয়ালি উল্লাহর ভাড়া বাসা থেকে ২৩টি জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওয়ালি উল্লাহ ওরফে অলি জেএমবির দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ফাঁসির আদেশ কার্যকর হওয়া সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সহচর। বাংলা ভাইয়ের বাড়িও কর্নিপাড়া গ্রামে।

গাবতলী-সারিয়াকান্দি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহেদী প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জেএমবির পুরোনো সদস্যরা   গাবতলীর গোলাবাড়িতে এসে নাশকতার পরিকল্পনার জন্য গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ সুপারের নির্দেশে গাবতলী মডেল থানা–পুলিশের একটি দল গোলাবাড়ি বাজারে অবস্থান নেয়। পরে ভোররাতের দিকে চকসদু বাজারের গাইবান্ধা হোটেলের সামনে ওমর আলীর বাড়িতে বসা জেএমবি সদস্যদের গোপন বৈঠকে অভিযান চালানো হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টাকালে বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ওয়ালি উল্লাহ ওরফে অলিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, ওয়ালি উল্লাহকে  ২০১৭ সালে গাবতলী মডেল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে ওয়ালি উল্লাহ, পলাতক আহসান হাবিব ওরফে জামাত আলীসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে নতুন করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করা হয়েছে। আহসান হাবিবও ২০১৭ সালে গাবতলী মডেল থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের হওয়া মামলার আসামি।

কর্নিপাড়া গ্রামে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওয়ালি উল্লাহ একসময় বাংলা ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। ২০০৭ সালের ৩০ মার্চ বাংলা ভাইয়ের ফাঁসি কার্যকর হয়। এরপর ওয়ালি উল্লাহ

নিজগ্রাম কর্নিপাড়া ছেড়ে শ্বশুরবাড়ি গাবতলী উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়েকে বিয়ে করেন। রহিম জেএমবির আমির শায়খ আবদুর রহমানের ভায়রা।

কর্নিপাড়া গ্রামে গেলে প্রতিবেশীরা জানান, ওয়ালি উল্লাহ বগুড়া শহরে থেকে একসময় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতেন। পরে গোলাবাড়ি বাজার এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ২০১৭ সালে জেএমবির সদস্যদের নিয়ে গোপন বৈঠক করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গাবতলী মডেল থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় আদালতে দীর্ঘদিন হাজিরা না দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।