নৌকা পেয়েছেন বড় ভাই; ছোট ভাই ও তাঁর স্ত্রীও মনোনয়নপত্র জমা দিলেন

আনোয়ারুল আশরাফ খান, আফরোজা সুলতানা ও কামরুল আশরাফ খানছবি: সংগৃহীত

নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান। এরপরও তাঁর ছোট ভাই সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান ও স্ত্রী আফরোজা সুলতানা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে তাঁরা মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ তথ্য জানিয়েছেন পলাশের ইউএনও ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম।

পরিবারের এক সদস্য নৌকার মনোনয়ন পাওয়ার পরও ছোট ভাই ও তাঁর স্ত্রীর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে স্থানীয়ভাবে বেশ আলোচনা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতা পরিবারেই রেখে দেওয়ার একটা কৌশলমাত্র। এই কৌশল প্রয়োগ করে আগেও ক্ষমতা নিজেদের কাছেই রেখে দিতে সক্ষম হয়েছিল পরিবারটি।

কামরুল আশরাফ খান ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন। সরকারিভাবে আমদানি করা ৭২ হাজার মেট্রিক টন সার বন্দর থেকে খালাসের পর গুদামে পৌঁছে না দিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি সার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) সভাপতি। তাঁর স্ত্রী আফরোজা সুলতানা পলাশ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বলছেন, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পলাশ আসনে প্রথমে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন আনোয়ারুল আশরাফ খান। ওই সময় অন্যান্য দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কারণে পলাশ আসনটি জাসদের প্রার্থী জায়েদুল কবিরকে ছেড়ে দিতে হয়েছিল। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হন কামরুল আশরাফ খান। ২০১৮ সালের নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য হন আনোয়ারুল আশরাফ খান। এবারের নির্বাচনে এখন পর্যন্ত অন্যান্য দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে জাসদের জায়েদুল কবির এবারও মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান, সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান ও উপজেলা মহিলা লীগের সভাপতি আফরোজা সুলতানার ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা ধরেননি। পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও তাঁদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম গাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরও বর্তমান সংসদ সদস্যের ছোট ভাই ও স্ত্রী কেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে ডামি প্রার্থী হিসেবেই হয়তো তাঁরা নির্বাচনের মাঠে থাকতে চাইছেন।’