আর কখনো ছবি আঁকবেন না তিশা
আর কখনো ক্যানভাসে তুলির আঁচড়ে চারপাশের জগৎকে মূর্ত করে তুলবেন না ফারাবি তিশা। দেয়ালে আঁকবেন না গ্রাফিতি। ডেঙ্গু কেড়ে নিয়েছে এই তরুণ চিত্রশিল্পী ও সংগঠককে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
ফারাবি তিশার বাড়ি ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের রাজাপুর ঘোনা এলাকায়। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যরা ফেনী শহরের পশ্চিম উকিলপাড়া ভূঞাবাড়ি এলাকায় বসবাস করেন।
তিশার মৃত্যুতে ফেনীর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শহরের দেয়ালে তাঁর করা গ্রাফিতি এখনো শোভা পাচ্ছে, অথচ তিনি নেই। কয়েক দিনের জ্বরের কাছে এভাবে তিনি হেরে যাবেন, তা কেউ মানতে পারছেন না।
তিশার বাবা নুরুল আবসার রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত মাসিক ‘মৌলিক’ পত্রিকার সম্পাদক। তাঁর এক ছেলে, এক মেয়ের মধ্যে তিশা ছিলেন বড়। আদরের মেয়েকে হারিয়ে শোকে ভাসছেন তিনি।
প্রথম আলোকে নুরুল আবসার বলেন, ঢাকায় অবস্থানকালে কয়েক দিন আগে তিশা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। তাঁকে প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে দেখাশোনা করতে সমস্যা হওয়ায় গত বুধবার তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার তিশার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে, একপর্যায়ে ওই দিন বিকেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তবে এর দুই ঘণ্টা পর আবারও তিশার পালস (নাড়ির গতি) ফিরে পেয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখানে শুক্রবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
তিশার স্বজনেরা জানান, গতকাল শুক্রবার রাত নয়টায় শহরের পশ্চিম উকিলপাড়ায় প্রথম জানাজা এবং রাত ১০টায় গ্রামের বাড়িতে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তিশাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
তিশার ফুফু সাহিদা সাম্য বলেন, তিশা ফেনী সরকারি কলেজ থেকে অনার্স শেষ করার পর ঢাকা আর্ট কলেজে পড়াশোনা করেন। পাশাপাশি তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ফেনীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিত্রকলার প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি। গত বছর তিশা ও তাঁর বন্ধুরা মিলে ফেনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় গ্রাফিতি আঁকেন, যা শহরবাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এ ছাড়া একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিশা।