চাঁদপুরের বাজারে এখন ‘ডিমওয়ালা ইলিশ’
নিষেধাজ্ঞা শেষ হতেই চাঁদপুরের মেঘনা ও পদ্মায় মাছ ধরতে শুরু করেছেন জেলেরা। তাঁদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর ইলিশ, বাজারেও বেড়েছে সরবরাহ। কিন্তু এসব ইলিশের অধিকাংশই ডিমওয়ালা। স্থানীয় মৎস্য কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, এতসংখ্যক ডিমওয়ালা ইলিশ ধরা পড়ায় মাছের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
মেঘনা ও পদ্মায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে গত শনিবার রাত ১২টায়। এ সময় থেকে নদীগুলোতে ইলিশ ধরা শুরু হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে বাজারেও আসছে প্রচুর ইলিশ।
গতকাল রোববার ও আজ সোমবার মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর, নারায়ণপুর, মুন্সীর হাট এবং মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর, সুজাতপুর ও আমিরাবাদ মাছ বাজারে ইলিশের প্রাচুর্য দেখা যায়। এগুলোর অধিকাংশই ডিমওয়ালা। তাই দামও কিছুটা কমেছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত ক্রেতাদের কাছে ছোট আকারের ইলিশ বা ‘টেম্পু ইলিশের’ চাহিদা বেশি। সচ্ছল ক্রেতারা কিনছেন বড় ইলিশ। অনেক দিন পর ইলিশের বাজারও কিছুটা চাঙা। বেচাকেনা ভালো হওয়ায় ক্রেতা-বিক্রেতারা খুশি।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের মাছ বিক্রেতা বিমল চন্দ্র বলেন, গতকাল বাজারে প্রত্যাশা অনুযায়ী ইলিশ এসেছে। আজ প্রায় ২০ মণ ইলিশ এসেছে। এগুলো মধ্যে ছোট ও মাঝারি আকারের মাছই বেশি, অধিকাংশই ডিমওয়ালা। বড় আকারের ইলিশ প্রতি কেজি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়, ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ইলিশ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় এবং ছোট আকারের প্রতি কেজি ইলিশ ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকালের তুলনায় আজ ইলিশের কেজিপ্রতি দাম কমেছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে দাম আরও কমতে পারে।
কয়েকজন ক্রেতা ও স্থানীয় বাসিন্দা আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, অভিযান শেষে বাজারে যে হারে ডিমওয়ালা ইলিশ মিলছে, তাতে ইলিশ রক্ষার অভিযানের সুফল ও সফলতা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়।
বাজারে ডিমওয়ালা ইলিশ আসার বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস। তিনি বলেন, বাজার থেকে ডিমওয়ালা ইলিশ সংগ্রহের জন্য মৎস্য বিভাগ থেকে লোক পাঠানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মেঘনায় কার্যকর অভিযান চালানোর পরও এত ডিমওয়ালা ইলিশ কেন ধরা পড়ছে—সেটি নিয়ে তাঁরা ভাবছেন। এতে ইলিশ উৎপাদনে প্রভাব পড়তে পারে।